ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলা ॥ আবারও পিছিয়েছে সাক্ষী গ্রহণ, পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ ৬ অক্টোবর

10

স্টাফ রিপোর্টার :
বিজ্ঞানলেখক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার সাক্ষীগ্রহণ আবারও পিছিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ থাকলেও সাক্ষীরা হাজির হননি। পরে আদালত আগামী ৬ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার এই মামলার কারাবন্দি আসামি আবুল খায়ের রশীদ আহমদের সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে জামিন আবেদন করেন। তবে বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লব জামিন নামঞ্জুর করে দেন।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মজিদ খান জানান, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ছিল গতকাল মঙ্গলবার। কারাবন্দি আসামি আবুল খায়েরকে আদালতে হাজির করা হলে তার পক্ষের আইনজীবী জামিন আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগে গত ৮ জুন ভার্চুয়াল আদালতে আবুল খায়েরের জামিন আবেদন করা হলেও জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন বিচারক। তিনি বলেন, সাক্ষীদের হাজির করতে না পারায় মঙ্গলবারও সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
নানা জটিলতায় গতিহীন হয়ে পড়া এই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে চলতি বছরের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। তবে এখানে এসেও মামলার কার্যক্রমে গতি আসছে না। বরং আগের মতই বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে তারিখ। এর আগে গত ২৫ জুন মামালার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে যায়।
গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক অনন্ত বিজয় দাশের ভগ্নিপতি এডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না। করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই অনেকদিন আদালতের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে মামলার তারিখ পড়লেও সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সন্ত্রাসবিরোধী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থান্তরের পরও কার্যক্রমে গতি পাচ্ছে না।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় কারাবন্দি দুই আসামির মধ্যে সিলেট কারাগারে আছেন শুধু আবুল খায়ের। সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত তারিখে তাকে আদালতে হাজির করা হলেও সাক্ষীরা অনুপস্থিতি ছিলেন। এ জন্য সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৬ অক্টোবর নতুন তারিখ ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১২ মে খুন হন লেখক ও ব্যাংকার অনন্ত বিজয় দাশ। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অনন্ত বিজয় দাশকে সিলেট নগরীর বনকলাপাড়ার নূরানী আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। অনন্ত বিজয় দাশ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্ম বিষয়ে মাস্টার্স করার পর সুনামগঞ্জের জাউয়াবাজারে পূবালী ব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে যোগ দেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের দিনই অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে এতে অভিযোগ করা হয়।