ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় ॥ করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোন ধরণের জরিমানা আদায় না করার অনুরোধ

17
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগের উপ-পরিচালক মো: ফখরুল ইসলাম।

গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর রবিবার চেম্বার কনফারেন্স হলে সিলেট চেম্বার এর উদ্যোগে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব। সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভোক্তা সাধারণের ন্যায়তঃ অধিকার রক্ষায় কাজ করে। মানহীন ও ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বিক্রয়, অধিক মূল্য গ্রহণ ও ভোক্তা সাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তক্রমে জরিমানা আদায় সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে সচেতন ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা কখনই আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তিনি জানান, সিলেটে নির্ধারিত জরিমানার হার থেকে অনেক কম জরিমানা আদায় করা হয় এবং এটির একমাত্র উদ্দেশ্য ব্যবসায়ীদেরকে সতর্ক করা।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব বলেন, বর্তমান করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। তিনি করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোন ধরণের জরিমানা আদায় না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, অনেক সময় ব্যবসায়ীরা সঠিক আইন-কানুন না জানার কারনে এবং সচেতনতার অভাবে ভুল করে থাকেন। তাই তিনি যেকোন ধরণের অভিযান ও জরিমানার পূর্বে ব্যবসায়ীদেরকে আইন-কানুন সম্পর্কে সচেতন করার অনুরোধ জানান। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন, তাই ব্যবসায়ীরা যেন কোনভাবে হয়রানির শিকার না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি সিলেটের ব্যবসায়ী সমিতিগুলোকে এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, পরিচালক মোঃ মামুন কিবরিয়া সুমন, পিন্টু চক্রবর্তী, মোঃ আতিক হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, মোঃ আমিনুজ্জামান জোয়াহির, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, ফখর উস সালেহীন নাহিয়ান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আমিরুল ইসলাম মাসুদ ও শ্যামল পুরকায়স্থ, সিলেট চেম্বারের সাবেক সহ সভাপতি ও সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ দিলওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান সিদ্দিকী, ক্যাটারার্স গ্র“প অব সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবলু, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সাব কমিটির যুগ্ম আহবায়ক শহিদ আহমদ চৌধুরী, অভ্যন্তরীণ বাজার সাব কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হাদী পাবেল প্রমুখ।
এদিকে গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর রবিবার চেম্বার কনফারেন্স হলে সিলেট চেম্বার এর উদ্যোগে সিলেটের আমদানী-রপ্তানীকারকদের সাথে চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব। সভায় সিলেটের ভোলাগঞ্জ, সুতারকান্দি ও তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানী-রপ্তানীকারকগণ তাদের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার কথা চেম্বার নেতৃবৃন্দের কাছে তুলে ধরেন। তারা বলেন, সিলেটের প্রায় সবকটি স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতে থেকে কয়লা, পাথর ও চুনাপাথর আমদানী হয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেবলমাত্র তামাবিল ব্যতীত অন্য কোন শুল্ক স্টেশনে কাস্টম্স কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ভবন ও গুদাম নেই। আমদানীকারকদের সুযোগ-সুবিধাও অত্যন্ত সীমিত। তারা তামাবিল স্থলবন্দরের মত সিলেটের সকল শুল্ক স্টেশনে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবী জানান। এছাড়াও আমদানীকারকগণ পণ্য আমদানী না হলে আমদানীর পূর্বে প্রদানকৃত অগ্রিম শুল্ক-করাদি সহজে দ্রুত রিফান্ডের ব্যবস্থা করা, করোনা মহামারীর কারণে ট্রেড লাইসেন্স এর সাথে অগ্রিম আয়কর রহিত করা, গাড়ির চাকার সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ওজন নির্ধারণ না করে প্রকৃত ওজন পরিমাপ করে আমদানী শুল্ক আরোপ করা, তামাবিল স্থলবন্দরের ডাম্পিং স্পেসের ভাড়া হ্রাস করা সহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব বলেন, সিলেটের ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ আমদানী-রপ্তানী ব্যবসার সাথে জড়িত। সিলেটের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানী হয়ে সারাদেশে সরবরাহ হয়ে থাকে। তাই সিলেটের আমদানী-রপ্তানীকারকদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, আমরা ইতোপূর্বেও আমদানী-রপ্তানীকারকদের বিভিন্ন সমস্যা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি, তাই এসব সমস্যাও নিশ্চয়ই সুরাহা হবে। তিনি জানান, আগামী কিছুদিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। উক্ত সভায় সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে আমদানী-রপ্তানীকারকদের দাবী-দাওয়াগুলো প্রস্তাব আকারে পেশ করা হবে বলে তিনি জানান। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের যেকোন দাবী-দাওয়া আদায়ে সিলেট চেম্বারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশ্বস্থ করেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, পরিচালক মোঃ মামুন কিবরিয়া সুমন, পিন্টু চক্রবর্তী, মোঃ আতিক হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক পরিচালক ও ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্র“পের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মিন্টু, গ্র“পের প্রতিনিধি বশির আহমদ, সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্র“পের সহ সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্তী, প্রতিনিধি পাপলু দাস, তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্র“পের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন ছেদু, ইলিয়াস উদ্দিন লিপু, মোঃ জালাল উদ্দিন, মোঃ শাহ আলম, মোঃ ফয়জুর রহমান, সুহেল আহমদ, হারুনুর রশীদ, মোঃ জামাল মিয়া, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ মনিরুল হক প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি