সিটি কর্পোরেশন বলছে গ্যারেজ নেই ॥ বিটুমিনের অভাবে চীন থেকে আমদানী করা কোটি টাকার ‘রোড মেইনটেনেন্স ভ্যাহিকেল’ যন্ত্র রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে

46
সিসিকের সামনে এভাবে পড়ে আছে প্রটোল রিপিয়ারিং যন্ত্র।

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সিলেট মহানগরীর খানা-খন্দ আর গর্ত হওয়া ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা থাকলেও বিটুমিনের অভাবে সিসিকের আমদানীকৃত ‘রোড মেইনটেনেন্স ভ্যাহিকেল’ মিশিন ট্রাকটি জনগণের কাজে আসছে না। বছরের শুরুর দিকে এ ট্রাকটি চীন থেকে কোটি টাকা দামে আমদানী করা হলেও এটা এখন সিটি কপোরেশনের সামনে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে।
সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে করোনা ভাইরাসের কারণেই মূলত: রাস্তাগুলোর এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। ফলে রাস্তাগুলো সংস্কার করা যায়নি। বর্তমানে মহানগরীর রাস্তাগুলো ভাঙাচোরা আর গর্ত থাকলেও বিটুমিনের কারণে বর্তমানে রাস্তার কাজে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ‘রোড মেইনটেনেন্স ভ্যাহিকেল’ মিশিন ট্রাকটি আমদানীর শুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করার পর আর এটা রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হয়নি।
গত ২৬ আগষ্ট বুধবার দৈনিক কাজিরবাজার পত্রিকার প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে মহানগরীর বেশীর ভাগ রাস্তা ছোট-বড় গর্ত আর ভাঙাচোরা, চলাচলের অনুপোযোগী শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। পরে সিটি কর্পোরেশন কদমতলী মুক্তিযোদ্ধা চত্তরের আশপাশের গর্তগুলো বিটুমিন ছাড়াই শুধু বালু ছোট পাথর দিয়ে কয়েকটি গর্ত ‘ছেব দিয়ে লেপ’ দেয়ার মতো আর শাহজালাল সেতুর মেন্দিবাগ ঢালের অংশে সিলেট সড়ক ও জনপদ বিভাগ একইভাবে গর্ত ভরাট করে দিলেও সেটা যানচলাচলে পুনরায় আবারও গর্ত হয়ে যাচ্ছে। মোট কথা দায়সারা কাজ করে যাচ্ছে তারা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে ভুক্তভোগিরা মনে করছেন। তবে সিটি কর্পোরেশন জানিয়েছে, বৃষ্টির সময় পর্যন্ত বর্তমানে ওইভাবে খানা-খন্দ আর গর্তগুলো মেরামত কাজ অব্যাহত রাখা হবে।
সরেজমিনে সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশমুখের বামপাশের লাল রংয়ের ‘রোড মেইনটেনেন্স ভ্যাহিকেল’ মিশিন ট্রাকটি দাঁড়িয়ে আছে। গ্যারেজে না রাখার কারনে রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে গিয়ে যন্ত্রটি আস্তে আস্তে মরিচা ধরার উপক্রম হয়েছে।
এ বিষয়য়ে সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন শাখার উপ-সহকারী কর্মকর্তা তানভীর আহমদ তানিম বলেন, ‘রোড মেইনটেনেন্স ভ্যাহিকেল’ মেশিন ট্রাকটি ২০২০ সালের শুরুর দিকে সিসিকের একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে সিলেট সিটি কর্পোরেশন আমদানী করে। এর ইঞ্জিন ইউএসএ এর এবং চীন এর তৈরী। এ যন্ত্রটি রাস্তার ছোট ছোট গর্তগুলো দ্রুত মেরামত করতে সক্ষম। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট কোন গ্যারেজ না থাকায় বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের সামনে রাখা হয়েছে। তবে গাড়ী রাখার গ্যারেজের জন্য সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মোগলাবাজার এলাকায় সিসিকের স্থায়ী গাড়ীর গ্যারেজ তৈরীর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিটুমিনের কারণে এ যন্ত্র দিয়ে রাস্তার বেহাল অবস্থা নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো: নূর আজিজুর রহমান বলেন, বিটুমিনের কারণে ‘রোড মেইনটেনেন্স ভ্যাহিকেল’ মিশিন ট্রাকটি রাস্তার গর্তগুলো মেরামত এবং মেঘ-বৃষ্টি থাকায় অন্য উপায়েও কাজ এখন করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, মহানগরীর বড় বড় গর্তগুলো আপাদত: বালু পাথর দিয়ে ভরাট কাজ অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, বিটুমিনের কেমিক্যাল টেন্ডার দেয়া হবে। করোনার কারণে ও বিটুমিনের অভাবে নগরীর রাস্তার কাজটা কিছুটা পিছিয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট সড়ক ও জনপদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।