রাতারগুলে মোটরঘাট খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৭

26
রাতারগুলে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে এক পক্ষ ও পুলিশের অবস্থান (উপরে) আহতদের মধ্যে কয়েকজন (নিচে)।

রাতারগুল সোয়াম ফরেস্টের মোটরঘাট বাজার খেয়াঘাটের নতুন ইজারাদার জুঁই এন্টারপ্রাইজকে দখল সমজিয়ে দিতে গিয়ে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, রাতারগুল সোয়াম ফরেস্টের মোটরঘাট খেয়াঘাটটি মঙ্গলবার সকালে এওলারটুক, চাঁনপুর ও পুয়াইনকাটা গ্রামের কিছু সংখ্যক লোকজন খেয়াঘাটের দখল ইজারাদারদের না দিতে মোটরঘাট বাজারে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা বর্তমান ইজারাদার জুঁই এন্টারপ্রাইজের কর্তৃপক্ষ খেয়াঘাটটি দখল নিতে আসলে ইজারাদারদের লোকজনদের উপর স্থানীয়রা হামলা চালায়। এক পযার্য়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) জুয়েল মিয়ার নেতৃত্ব পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে নতুন ইজারাদার জুঁই এন্টারপ্রাইজকে সিলেট জেলা পরিষদের উপ- সহকারী প্রকৌশলী হাসিব আহামেদ খেয়া ঘাটটি মঙ্গলবার সকালে ঘাটের দখল সমজিয়ে দেন। এ সময় তিনি জানান, মোটরঘাট খেয়াঘাটটি সিলেট জেলা পরিষদের একমাত্র বৈধ খেয়াঘাট। জুঁই এন্টারপ্রাইজ সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় তাকে আমরা খেয়াঘাট ইজারা দিতে মনোনীত করেছি। যারা অবৈধ ভাবে খেয়াঘাটে এসে বাধা দিয়েছে তা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি। গতকাল থেকে আগামী ৩০ জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত এই খেয়াঘাট জুঁই এন্টারপ্রাইজকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। জুঁই এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষ সরকারের সকল আইন মেনে ঘাটটি পরিচালনা করবে। দুই মাইল সীমানার মধ্যে পর্যটকবাহী সকল নৌকা মোটরঘাট খেয়াঘাটের অধীনে বিবেচিত হবে বলে তিনি জানান। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের ১৭ জন আহত হয়েছেন। তবে জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তির অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। আহত ব্যক্তিদের সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।
হামলায় আহতরা হলেন, দানা মিয়া (৪৫), গিয়াস উদ্দিন (২৬), সবুজ মিয়া (২২), শুক্কুর আলী (৩০), মকবুল হোসেন (৩৫), মন মিয়া (৪০), মনির উদ্দীন (২৩), দানিছ (২২), রিপন (২৩), নজরুল (২১), আমির আলী (৪০), আনা মিয়া (৭০), আমির আলী ২ (৩৫), বশির মিয়া (৮০), ইউসুফ আলী (৫০) ও দিলোয়ার হোসেন (৩০)।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান, খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দিলোয়ার হোসেন, গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম কামরুল, খাদিমনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তারা মিয়া, সিলেট সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. ইকলাল আহমদ।
এ বিষয়ে ইজারাদারদের পক্ষে ফরিদ আহমদ জানান, আমরা সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ার আমাদেরকে সিলেট জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ইজারাদার হিসাবে মনোনীত করেন। মঙ্গলবার সকালে সিলেট জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ সরোজমিনে ঘটনাস্থলে এসে খেয়াঘাটের দখল আমাদেরকে সমজিয়ে দিয়েছেন। এসময় আমরা খেয়াঘাটে আসতে চাইলে আগে থেকে অৎ পেতে থাকা এওলারটুক, চাঁনপুর ও পুয়াইনকাটার গ্রামের কিছু সংখ্যক লোকজন খেয়াঘাটের সামনে জমায়েত হয়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমাদের পক্ষের ১১ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত একজনের অবস্থা আশংকাজনক। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমরা সকলের সহযোগিতায় এই খেয়াঘাটটি পরিচালনা করতে চাই।
ঘটনার বিষয় এওলারটুক গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, এই হামলায় আমার এলাকার ৬ জন আহত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এটা ঘুদারাঘাট রাতারগুল পর্যটক নেওয়ার ঘাট নয়।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম শাহাদত হোসেন জানান, মোটরঘাট বাজারে খেয়াঘাট নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সিলেট জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ইজারাদারদের খেয়াঘাটের দখল সমজিয়ে দিয়েছেন। যারা অবৈধ ভাবে বাধা দিয়ে সংঘর্ষের ঘটনার সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। (খবর সংবাদদাতার)