তালিকা তৈরির কাজ শুরু হবে শীঘ্রই ॥ অনলাইন ক্লাসের জন্য শাবির অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন মোবাইল ডিভাইস

22

শাবি থেকে সংবাদদাতা :
করোনা ভাইরাসের সংকটকালীন পরিস্থিতিতে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে ও ক্লাসে সকল শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদেরকে মোবাইল ডিভাইস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এ প্রসঙ্গে শাবি উপাচার্য বলেন, মোবাইল ডিভাইস দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করে পাঠানো বিষয়ে আমাদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা সেটা পাঠিয়ে দেব। আসলে এ বিষয়ে অনেক আগে থেকেই সরকারের সাথে কথা বলছে ইউজিসি। শুধু আমরা নয় বরং সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা পাবে।
তিনি বলেন, আসলে এটা নিয়ে কোনও নির্ধারিত মানদণ্ড নেই। যাদের আসলেই ডিভাইসের প্রয়োজন, তাদেরকেই এ ডিভাইস দেওয়া হবে। যাদের কেনার সামর্থ্য নেই কিংবা সত্যিকার অর্থে যাদের প্রয়োজন তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের তালিকা আমাদেরকে দিতে বলেছে ইউজিসি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগে দুইজন করে (একজন পুরুষ ও একজন মহিলা শিক্ষক) ছাত্র/ছাত্রী উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া আছে।তারা শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদেরকে খুঁজে বের করবে। তাছাড়া সিআর (ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ) তাদের সহপাঠীদের বিষয়ে অবগত থাকে। তাদের সহায়তা আমরা নিয়েও কাজ করছি। একেবারে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তো দেওয়া সম্ভব না তবে তাদেরকে যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা আমাদের থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বসবেন। এখানে আরও অন্যান্য মন্ত্রণালয় আছে যারা এ সাথে যুক্ত তাদের সাথে বসবেন এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে তালিকা নিয়ে কতগুলো সংখ্যা হয় তা নিয়ে কাজ তারপর সিদ্ধান্ত হবে ডিভাইসটি শিক্ষার্থীদের একবারে দিয়ে দেওয়া হবে কিনা।
জানা যায়, ভার্চুয়াল ক্লাসে অংশ নিতে যেসব শিক্ষার্থীর ডিভাইস কেনার সক্ষমতা নেই, তাদের তালিকা পাঠাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যদের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
আগামী ২৫ আগষ্টের মধ্যে director_publicuniv@ugc.gov.bd 

এই ঠিকানায় শিক্ষার্থীদের ‘নির্ভুল তালিকা’ পাঠাতে বলা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য গত ২৫ জুন উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে ইউজিসি। “উপাচার্যদের মতামতের ভিত্তিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যাতে সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধাসহ শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডেটা সরবরাহ এবং সফট লোনের আওতায় স্মার্টফোন সুবিধার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য কমিশন থেকে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস সংসদ টিভিতে প্রচার করা হচ্ছে।
বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মত করে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলেও সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও ভার্চুয়ালি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস শুরু করেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অনেকে তাল মেলাতে পারছেন না প্রয়োজনীয় ডিভাইস ও উপযুক্ত ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে।
বিশেষ যেসব শিক্ষার্থী ছুটির মধ্যে গ্রামে অবস্থান করছেন, সেখানে ইন্টারনেটের গতি তাদের ভোগাচ্ছে, তেমনি মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ তাদের জন্য হচ্ছে বাড়তি চাপ। গ্রামে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের এক ঘণ্টার একটি ক্লাস করতে মোটামুটি ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাবাইট ডেটা খরচ হয়। দাম নির্ভর করে কে কোন অপারেটরের কোন ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করছেন তার ওপর।
আবার অনেকে তাদের বাসায় ফোরজি নেটওয়ার্ক পান না বলে ভিডিও কলে ক্লাসে যোগ দিতে তাদের ভালো নেটওয়ার্ক আছে এমন কোথাও যেতে হয়। আর যাদের স্মার্ট ফোন বা ল্যাপটপ নেই, তাদের ক্লাসে যোগ দেওয়ারও সুযোগ হচ্ছে না।