বাগান পরিদর্শনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আরিফুর রহমান ॥ চুনারুঘাটে বৃদ্ধি পাচ্ছে মাল্টা-পেঁপেসহ মিশ্র ফলের চাষ

10

চুনারুঘাট থেকে সংবাদদাতা :
অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল মাল্টা, সাথে রয়েছে সাথী ফসল হিসেবে সুইট লেডি পেঁপেসহ বিভিন্ন যাতের ফসল। বর্তমানে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন বাগানে উৎপাদিত মাল্টা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর ফল চাষ হচ্ছে। তাই দিন দিন এ অঞ্চলে অত্যন্ত লাভজনক এই ফল বাগানের পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাল্টা মিনারেল ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ একটি সুস্বাদু ফল। বিদেশী মাল্টার চেয়ে স্থানীয় বাগানে উৎপাদিত মাল্টা খেতে বেশ মিষ্টি, মুখরোচক ও রসালো। মাল্টা ও পেঁপেসহ বিভিন্ন মিশ্র ফল চাষে ঝুঁকছেন চুনারুঘাট উপজেলার কৃষকরা। সাথে সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে নিরাপদ ও বিষমুক্ত বিভিন্ন মিশ্র ফল যেমন- নাগা মরিছ, জিংগা ও তিত করলা।
বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এখন এসব ফল অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রধান খাবারের অংশে স্থান করে নিয়েছে। যে কেউ এই ফলের বাগান স্থাপন করতে পারবেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসব ফল চাষে আগ্রহী বেড়েছে কয়েকগুন। চুনারুঘাটের একটি পেঁপে ফলের বাগান থেকে বাজারে প্রতি সপ্তাহে ফল বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৭ মণ পর্যন্ত। একটি পেঁপে ফলের গাছ ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং বছরে ২ বার ফল আসে। সাধারণত মার্চ ও জুলাই মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফুল আসার ৬০ দিনের মধ্যেই এই ফল খাওয়ার উপযোগি হয়। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে অধিক পরিমানে বাগান স্থাপনের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় দিন দিন মাল্টা ও পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল চাষের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে চুনারুঘাট উপজেলার ১২ শত হেক্টর জমিতে বিভিন্ন রকমের ফল চাষ হচ্ছে। শুধুমাত্র পেঁপে ২০ হেক্টর ও মাল্টা ১৫ হেক্টর ফলের বাগান স্থাপন করা হয়েছে। আগ্রহী কৃষকদের উপজেলা কৃষি অফিস চুনারুঘাট থেকে প্রদর্শণী স্থাপনের জন্য মাল্টা, পেঁপে, আম, লিচু ও বিভিন্ন ফল গাছের চারা, সার, বালাইনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণ দেওয়ার মাধ্যমে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়। পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে বাগান করতে আগ্রহী কৃষকদেরকে পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। জমিতে ধান ফসল চাষ করার অভ্যাস থেকে কৃষকদের ফিরিয়ে এনে অধিক লাভজনক অর্থকরি ফসল ফল চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিস কাজ করে আসছে। এই ফসলগুলো চাষ করলে একদিকে কৃষকরা যেমন কম খরচে ও কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করতে পারেন অপরদিকে জমির উর্বরতা শক্তিও রক্ষা হয়। উপজেলার অনেক বেকার তরুণরা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বর্তমানে মাল্টা ও পেঁপের বাগানসহ বিভিন্ন মিশ্র ফলের বাগান করার দিকে ঝুঁকছেন।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আরিফুর রহমান অপু। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে স্থাপিত প্রতিটি ইউনিয়নে ৩২টি করে চুনারুঘাট উপজেলায় মোট ৩শত ২০টি পারিবারিক পুষ্টি বাগানের একটি বাগান এবং চুনারুঘাট কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপিত ৬ বিঘা জমির মাল্টা, পেঁপে ও নাগা মরিছের মিশ্র ফল ও সবজির বাগানসহ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাগবাড়ী গ্রামের কৃষক উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম রিপনের ছাদ বাগান পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় কৃষকদেরকে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন এবং সার্বিক কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাগানগুলো পরিদর্শনকালে সঙ্গে ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দিন সরকার ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দসহ বাগান মালিকরা।