সুনামগঞ্জে গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার, আটক ৬

6

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জে এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার জলিলপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান সুনামগঞ্জ সদর থানার উপ পরিদর্শক আল মামুন। এ ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, পৌর শহরের জলিলপুর এলাকার শাহজাহান (৩৫), আরমান (৩০), জুয়েল মিয়া (৩২), সামছুদ্দিন (২৮), জহুর মিয়া লিটন (৪২) ও আনোয়ার হোসেন (৫৫)। এর মধ্যে জহুর মিয়া লিটন সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জে শিমুলবাক ইউনিয়নের তেরহাল গ্রামের গৃহবধূ (৩৮) ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য সুনামগঞ্জ পৌরসভার জলিলপুর এলাকার শাহাব উদ্দিনের কাছে সুদে টাকা ধার আনতে যায়। এ সময় শাহাব উদ্দিন গৃহবধূকে জানান, স্থানীয় জুয়েলের কাছ থেকে তিনি বুধবার সকালে টাকা সংগ্রহ করে দেবেন এবং বাড়িতে না ফিরে তার বাসায় রাতে থেকে যাওয়ার জন্য গৃহবধূ রাতে ভাত খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলে শাহাব উদ্দিনের বখাটে বড় ভাই শাহজাহান গৃহবধূকে টাকা ধার দেবেন বলে জানান ও তার ঘরেই থাকতে বলেন। গৃহবধূ এতে রাজি না হলে তাকে জোর করেই তার ঘরে নিয়ে যায় শাহজাহান।
পুলিশ আরও জানায়, কিছুক্ষণ পরেই শাহজাহানসহ চার জন গৃহবধূকে জোর করে একটি নৌকায় তোলে। সেখান থেকে জলিলপুর গ্রাম সংলগ্ন নৈন্দা বিল এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে চারজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় গৃহবধূকে বেধড়ক মারধরও করে ধর্ষণকারীরা। পরে স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর জহুর মিয়া লিটনের কাছে গৃহবধূকে রেখে ধর্ষণকারীরা চলে যায়। পরে জহুর মিয়া লিটন ও আনোয়ার হোসেন একটি দোকান ঘরের পেছনে নিয়ে গৃহবধূকে আবারও ধর্ষণ করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
বুধবার ভোরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ জলিলপুর এলাকার একটি দোকানের পেছন থেকে গৃহবধূকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চার ও পরে আরও দুই জনকে আটক করে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে গৃহবধূ বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বিকেলে পুলিশ ছয় আসামিকে সুনামগঞ্জ সদর আমলগ্রহণকারী আদালতে তুললে বিচারক কুদরত ই এলাহি তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সুনামগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক আল মামুন জানান, পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয় জনকেই আটক করেছে। নির্যাতনের শিকার মহিলাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের শিকার মহিলার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো, এর বেশি কিছু বলা যাবে না।