সুপেয় পানি সংকটে কুলাউড়া রেল কলোনীর বাসিন্দারা

23
Glass of fresh water

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
প্রায় এক মাস যাবৎ পানির সংকটে পড়েছেন কুলাউড়া পৌর এলাকার রেল কলোনীর বাসিন্দারা। প্রায় আড়াইশত পরিবারের আবাসস্থল এই কলোনীর বিভিন্ন বাসা বাড়িতে পানি নেই। এতে চরম ভোগান্তি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন এখানকার শিশু, বৃদ্ধ মহিলা। এদিকে কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, ডিপ টিউবওয়েলের পানির স্তর নিচে নেমে আসায় পানি উঠছে না। নতুন ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের আগে এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানান তারা।
স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, পানির পাম্প নষ্ট থাকায় পানি সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হচ্ছে না। আর নষ্ট পাম্প সচল করতে কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই পানি না পেয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে দিন পার করছেন তারা। তাদের দাবি, গোসল করা তো দূরের কথা, কুয়োর অস্বাস্থ্যকর পানি তুলে রান্নার কাজ সারছেন মহিলারা। এবিষয়ে বারংবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না তারা। প্রায় এক মাস হতে চললেও এর সমাধান হয় নি।
জানা যায়, প্রায় আড়াই’শ পরিবারের সদস্য কলোনি এলাকায় বাস করছেন। কলোনি এলাকার কোথাও সুপেয় পানি না পেয়ে এলাকার একমাত্র আশ্রয়স্থল রেলওয়ে জামে মসজিদ ও জুনিয়র হাইস্কুল এলাকায় স্থাপিত দু’টি ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা। রেল কলোনি এলাকায় নির্ধারিত ট্যাংক থেকে প্রতিদিন দুইবার কলোনি এলাকার মানুষের মাঝে পানি সরবরাহ করা হতো। তাও আবার চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। কিন্তু গত প্রায় ১ মাস যাবৎ পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখানকার মানুষ পানির জন্য দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, কুলাউড়া রেলওয়ে জুনিয়র হাইস্কুলে অবস্থিত ডিপ টিউবওয়েলের পানির জন্য লাইনে অপেক্ষা করছেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ বালতি, ড্রামসহ বিভিন্ন ধরনের পাত্র নিয়ে পানি সংগ্রহ করছেন। পানির সংকটের কারণে হিমশিম খাচ্ছেন গৃহিণীরা। রান্নার কাজসহ শিশুদের নিয়েও বিপাকে পড়েছেন মায়েরা। তাছড়া কলোনি এলাকায় একটি কুয়া থেকে কলস দিয়ে নোংরা পানি সংগ্রহ করতে দেখা গেছে একজন মহিলাকে।
প্রচন্ড তাপদাহে পানির চাহিদা থাকলেও বর্তমানে পানি সংকটে দৈনন্দিন জরুরি কাজও ঠিকমতো করতে পারছেন না স্থানীয়রা। এ অবস্থায় কেউ কেউ বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করছেন। কেউ কুয়োর পানি কিংবা পুকুরের নোংরা পানি দিয়েই রান্না, গোসলসহ ধোয়া-মুছার কাজ সারছেন।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, কুয়া কিংবা পুকুরের নোংরা পানি ব্যবহার করায় এলাকায় বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরলেও কোন সুরাহা মিলছে না বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী জুয়েল হোসেন বলেন, পানির পাম্প মেরামত ও পানি সরবরাহ আমার বিভাগের কাজ নয়। তাই আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। ইলেকট্রিক, ইঞ্জিনিয়ার ও পানি সরবরাহ বিভাগ এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে বলেও তিনি জানান।