কুলাউড়ায় তিন বছর আগে নিখোঁজ প্রবাসীকে ফিরিয়ে দিতে স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী

5

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক ব্যক্তি তিন বছর নিখোঁজ থাকার পর হঠাৎ তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। একটি চক্র তাকে জানায়, তার স্বামী জীবিত অবস্থায় আছেন এবং তাঁর মুক্তিতে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে।
এ ঘটনায় কুলাউড়া থানায় নিখোঁজ ইয়াকুব আলীর স্ত্রী একটি মামলা (নং-১২, ১৬/০৮/২০২০ইং) দায়ের করেন। পরে পুলিশ আফসার হোসেন সাদ্দাম (৩০) এবং মো. তারেক মিয়া (২৪) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে। আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে নিকটাত্মীয় একজনের বিয়েতে অংশ নিয়ে বাড়িতে ফেরার সময় নিখোঁজ হন সৌদি আরব প্রবাসী ইয়াকুব আলী (৫৫)। তিনি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও গ্রামের বালিসিন্দ্রী গ্রামের মৃত আনিছ মোহাম্মদের ছেলে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (নং-৬৫৪, তারিখ- ০৮/০৬/২০১৭ইং) করা হয়।
পরিবারের কর্তাব্যক্তিকে হারিয়ে হতাশা আর বুক ভরা হাহাকার নিয়ে বাস করছিলেন ইয়াকুব আলীর স্ত্রী, ৪ ছেলে ও দুই মেয়ে। গত ৫ আগষ্ট রাত ৯ টা ২০ মিনিটের দিকে একটি ফোনকল আসে ইয়াকুব আলীর স্ত্রীর মোবাইলে।
ইয়াকুব আলীর স্ত্রী কমলা বেগম বলেন, ‘ফোনের অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি জানায় যে, ইয়াকুব আলী তাদের হেফাজেতে আছেন। মুক্তিতে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি জানায় ইয়াকুব আলী তাদের সাথে আছেন। তারা ইয়াকুব আলীকে অপর প্রান্তে কথা বলতে দেয়। ইয়াকুব আলী পরিবারের সকল সদস্যের ব্যাপারে জানতে চান এবং কুশলাদি বিনিময় করেন। এরপর হঠাৎ ফোনকলটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।’
ঘটনার কালক্ষেপণ না করে কমলা বেগম তার সন্তান ও স্বজনদের নিয়ে কুলাউড়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন। পুলিশ তদন্ত করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে ব্যক্তির মোবাইল থেকে কল আসে, তাকে গ্রেফতার করে। ধৃত ব্যক্তির তথ্যানুসারে দ্বিতীয় আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ইয়াকুব আলী নিখোঁজ হন ২০১৭ সালের ৮ জুলাই। হঠাৎ এই ফোনকল আসে এবং অপর প্রান্ত থেকে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইয়াকুব আলীকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে যে, ইয়াকুব আলীকে অপহরণপূর্বক গুম করার সাথে গ্রেফতারকৃতরা জড়িত আছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রহিম বলেন, ফোনকলে মুক্তিপণ দাবি করা ব্যক্তিদের তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আদালতে আসামীদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, আসামীদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।