দোয়ারাবাজারে খাসিয়ামারা নদীতে সেতু না থাকায় ২০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

17

দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে খাসিয়ামারা নদীতে সেতু না থাকায় জনদুর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছে। রশি টেনে ঝুঁকি নিয়ে হাতনৌকায় প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীসহ হাওরপারের ২০ গ্রামবাসীকে পাহাড়ি খরস্রোতা ওই নদীটি পাড়ি দিতে হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর ছুঁই ছুঁই, তবু দোয়ারাবাজারের হাওরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন উন্নয়ন হয়নি।
উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হাওরপারের কৃষিনির্ভর ও মৎস্যচাষ খ্যাত ১০-১৫টি গ্রামে দীর্ঘ তিনযুগ ধরে মৎস্য খামার, সবজি চাষ ও বোরো ধান আবাদ করে আসছেন কৃষকরা। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশায় বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে। খাসিয়ামারা নদীর টেংরা-আলীপুর বাজারের পাশে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের হলেও তা বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি আজো। ফলে উপজেলার সুরমা ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের টেংরাটিলা, আলীপুর, আজবপুর, গিরিসনগর, পশ্চিম টিলাগাঁও, নূরপুর, সোনাপুর, নন্দীগ্রাম, সুলতানপুর, বড়কাটা, বৈঠাখাই, হাছনবাহার, এরুয়াখাই, রসরাই, সোনাপুরসহ ২০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে। পাশাপাশি আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে প্রতিবছর লন্ডভন্ড হয় দুইতীরের শত শত বাড়িঘরসহ সহস্রাধিক হেক্টর ফসলি জমি।
সরেজমিন গেলে স্থানীয় আলীপুর গ্রামের আব্দুস সহিদ জানান, ‘আমরা বারোমাসই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রশি টেনে নৌকায় নদী পারাপার হই। ফলে মাছ বাজারজাতকরণ, মৎস্য খাদ্য পরিবহণসহ সবকিছুতেই অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে।’
স্থানীয় নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান জানান, ‘স্থানীয় ৮-১০ গ্রামের কৃষক-কৃষানী ও মৎস্য খামারিরা প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ মাছ-সবজি উৎপাদন করেন। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাজারজাত করা সম্ভব। কিন্তু স্থানীয় খাসিয়ামারা নদীতে কোনো সেতু না থাকায় পানির দরে বিক্রি করতে হয় এসব পণ্য সামগ্রী।
আলীপুর মুহিবুর রহমান মানিক সমাজকল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি আমির হোসেন বলেন, ‘নদী পরাপারে আমাদের দুর্ভোগের বিষয়টি এমপি মহোদয় অবগত রয়েছেন। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আমরা আশাবাদি।’
সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মামুনূর রশীদ বলেন, ‘খাসিয়ামারা নদীতে সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এলজিইডি ঢাকার একটি টিম প্রাথমিক জরিপকাজ পরিচালনা করেন। কিন্তু বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে তা আমার জানা নেই। তবে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমিও এলাকাবাসীর সাথে দ্রুত সেতু স্থাপনের দাবি জানাই।’
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুর রহিম জানান, ‘আমি ওই এলাকায় গিয়েছি। সেখানে একটি সেতু জরুরি প্রয়োজন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’