বন্যায় ভেঙ্গে গেল জামালগঞ্জের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার স্বপ্ন, চান সরকারি সহায়তা

6

নিজাম নুর জামালগঞ্জ থেকে :
আব্দুল ওয়াদুদ একজন বিদেশ ফেরত মৎস্যজীবী। দীর্ঘ পনের বছর প্রবাসে থেকে নিজের পরিশ্রমে জমানো অর্থ দিয়ে তিন একর জমিতে মৎস্য চাষ শুরু করেন জামালগঞ্জ উপজেলার এই মৎস্যজীবী। বিনিয়োগ করেন প্রায় নিজের সঞ্চয়ের ১০ লক্ষ টাকা। স্বপ্ন দেখতেন মৎস্য চাষ করে নিজের বাকি জীবনটা ও ছেলে দের পড়ালেখা সহ যাবতীয় সংসার খরচ চালাবেন এই খামার থেকে। কিন্তু এবারের বন্যায় সব স্বপ্ন ভেসে গেছে বানের পানিতে। স্বপ্ন দেখছিলেন ৪-৫ লক্ষ টাকা মুনাফা লাভ করবেন।
বানের পানিতে তার সব মাছ ভেসে যাওয়ায় তিনি এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সবকিছু হারিয়ে তিনি এখন দিশেহারা।
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের বর্তমান ঠিকানা মানিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তিন একর জমিতে প্রায় ৬ টির বেশি অংশে “জুনায়েদ মৎস্য খামার” নামে একটি খামার স্থাপন করেন কয়েক বছর হল। তিনি দেশি বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করতেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারটির চতুর্দিকে পার পানির নিচে। প্রথম বার বন্যা দেখা দেওয়ায় আত্মরক্ষার স্বার্থে নেট দিয়ে সাময়িক ভাবে গিড়ে রাখলেও ২য় বার বন্যায় আর তা রক্ষা করা সম্ভব হলনা। তৃতীয় বার আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আর কোন আশায় বেঁচে থাকল না। নিজের বসত ভিটা পর্যন্ত পানিতে ভাসল। ১০-১৫ লক্ষ টাকার বিভিন্ন জাতের মাছ পানিতে ভাসল। তিনি জানান আগামী আগষ্ট সেপ্টেম্বর মাসে মাছ গুলো বিক্রি শুরু করতাম। প্রতিটি মাছ ১০০০/৭০০ শত গ্রাম ওজন হয়েছে। তাতে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা লাভ হত তার। জামালগঞ্জ -সুনামগঞ্জ সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় সহজেই পানি কমছেনা এবারের বন্যায় ফলে চরম হতাশায় আছেন আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
মৎস্য চাষী আব্দুল ওদুদ বলেন, দীর্ঘদিন সৌদি আরব থেকে দেশে এসে কিছু করার স্বপ্ন নিয়েই খামার করেছিলাম। আমার খামারে ২ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করত। তিন একর জমি ২০ লক্ষ টাকায় ক্রয় করে খামারে ১৫ লক্ষ টাকার উপরে বিনিয়োগ করেছিলাম। আশা ছিল আগষ্ট মাসে মাছ বিক্রি হলে ৪/৫ লক্ষ টাকা আয় হবে। কিন্তু বন্যায় আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। এ ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেব তা ভেবে পাচ্ছি না। আবারও যে ব্যবসা শুরু করতে পারবো, সেই রকম কোন ব্যবস্থা আমার নেই। ঐসব করতে গিয়ে কিছু ধার দেনাও করতে হয়েছে। এখন কিভাবে দেনা শোধ করব আর কিভাবে নিজের ছেলে মেয়ে বাঁচব সেই চিন্তায় আছি। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি আমিসহ যারা সহায়-সম্বল হারিয়েছি তাদের দিকে একটু নজর দেওয়ার জন্য। যদি আমরা সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সহযোগিতা সহ লোন পাওয়ার সুযোগ পেতাম তাহলে আবারও ঘুড়ে দাঁড়াতে পারতাম।