মহানগর আওয়ামী লীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ॥ গাছ আমাদের জীবন গাছ রোপণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশও আরোও উন্নত হবে

13
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ হক স্মরণে জেলা বিএনপি আয়োজিত ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নজরুল ইসলাম খান।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, এম এ হক ছিলেন আপাদমস্তক জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন সজ্জন ব্যক্তিত্ব ও ভালো মানুষ। তার রাজনীতির মূল থিম ছিল জনকল্যাণ। জীবনে একবার এমপি পদে এবং দুই বার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। কিন্তু বিজয়ী হতে পারেননি। তবুও এম এ হক মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যান নি। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি আর্ত মানবতার কল্যাণে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। জীবনের দীর্ঘ সময় তিনি সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক, সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সুসংগঠিত করেছেন ও সিলেট বিএনপিকে শক্তিশালী করেছেন। কিন্তু বিনিময়ে প্রতিদান চান নি কখনো। তার প্রতিপক্ষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় এম এ হক কেমন ছিলেন, তারাই জবাব দিবে এমন সজ্জন ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ বর্তমানে হয়না। সুতরাং এম এ হক ছিলেন সিলেট বিএনপির বটবৃক্ষ। তার অভাব পূরণ হবার নয়। তবু এম এ হকদের অবদান কখনো ভুলে যাবার নয়। বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বিএনপির ইতিহাসে এম এ হকের নাম চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি মঙ্গলবার বিকেলে বৃহত্তর সিলেটের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আলহাজ¦ এম এ হক স্মরণে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলী আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: সাখাওয়াত হাসান জীবন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন মিলন। ভার্চুয়াল সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সিলেটের সভাপতি ডা: শামীমুর রহমান, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী, ড্যাব সিলেট জেলা সভাপতি ডা: নাজমুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফখরুল ইসলাম ফারুক, শাহ জামাল নুরুল হুদা, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, মরহুম এম এ হকের পুত্র ব্যারিষ্টার রিয়াশাদ আজিম হক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মামুনুর রশীদ চেয়ারম্যান, আব্দুল আহাদ খান জামাল, আবুল কাশেম ও শামীম আহমদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন নাদিম, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি জাহানারা ইয়াসমিন ও জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা আমেনা বেগম রুমি প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন এবং দল পুনর্গঠনে সিলেটে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এম এ হককে কাছে থেকে দেখার এবং একাধিকবার এক সাথে বসার সৌভাগ্য হয়েছিল। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে সিলেটেও দলের কোন্দল ও গ্র“পিং থাকাটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু একজন মানুষের সামনে বসলে নিমিষেই সকল বিভেদ ভুলে যেতো তিনি ছিলেন বিএনপির হক। দীর্ঘদিন তিনি বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কোন দিন পদ পদবীর জন্য তদবির করেননি। চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার দায়িত্বে থেকেই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। অথচ দলের জন্য তার আত্মত্যাগের কারণে তার স্থান অনেক উপরে থাকার কথা ছিল। জীবনে দুইবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে বিজয়ী হতে পারেন নি। কিন্তু পরাজয়ের জন্য কাউকে দোষারূপ করেন নি। এম এ হক সফল এবং সৎ ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যবসা করে আয় রোজগার করে দলের পেছনে খরচ করেছেন। কিন্তু দলকে বিক্রি করেননি। এ কারণেই এম এ হকের মতো মানুষগুলো বিএনপির অমূল্য সম্পদ। তাদের জীবনী আমাদের জন্য অনুস্মরণীয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, দল ও সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য রাজনীতিকের নাম এম এ হক। আমি দীর্ঘদিন সিলেট বিএনপির সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলাম। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও সিলেটে বিএনপিকে শক্তিশালী করার পেছনে এম এ হকের মত নেতার সীমাহিন অবদান ছিল। সিলেটে সাংগঠনিক কাজ করতে গিয়ে আমি যখন খুব জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি তখনই দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে একজন হক কে দেখেছি নিমিষেই সমস্যার সমাধান করতে। যেখানে হক সেখানে কোন গ্র“পিং কোন্দল ছিল না। এম এ হকরা শুধু বিএনপির নয় গোটা দেশের সম্পদ। এম এ হকের দেখানো পথে শুধু সিলেট না, গোটা দেশের বিএনপি পরিচালিত হলে সাংগঠনিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আলহাজ¦ এম এ হকের সাথে আমার সম্পর্ক ১২/১৪ বছরের। তবে সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকায় জীবনের শেষ সময়ে সিলেট বিএনপির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হকের বাসায় একাধিকবার বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম। তিনি ছিলেন মরহুম এম সাইফুর রহমানের পর সিলেটে বিএনপির সর্বস্তরের দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে গ্রহণ যোগ্য ও নির্ভরতার প্রতীক। জীবনের শেষ সময়েও তিনি সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। এমন নেতার শূন্যতা কখনো পূরণ হবার নয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, এম এ হক শুধু বিএনপি নয়, সিলেটের সকল দল ও মতের মানুষের সবার কাছে ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধার ও ভালোবাসার ব্যক্তিত্ব। যা তার মৃত্যু পরবর্তী সময়ে জানাযা সহ বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করতে গিয়ে এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট হওয়ার পর থেকে এম এ হক বড় ভাই হিসেবে ছায়া দিয়ে আসছিলেন। হক ভাই নেই, সেই কথা মন থেকে এখনো মেনে নিতে পারি না।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদী লুনা বলেন, আমার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সময় বেশীদিন হয়নি। তবে এম এ হকের সাথে সম্পর্ক ছিল অনেক আগে থেকেই। তবে রাজনীতিতে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হওয়ায় একাধিকবার এই বর্ষীয়ান নেতার সাথে একাধিক বৈঠকে ও অনুষ্ঠানে বসার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন ভালো মানুষ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, সেই ১৯৭৭ সাল থেকে এম এ হকের সাথে রাজনীতি করে আসছি। এম এ হকের শূন্যতা কোনদিন পূরণ হবার নয়। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এম এ হকের দেখানো পথে পরিচালিত হয়ে সিলেটকে বিএনপির দুর্জয় ঘাঁটিতে পরিণত করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। বিজ্ঞপ্তি