নেই ব্যবসা, নেই আয় রোজগার ॥ সিলেটে লক্ষাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পথে বসার উপক্রম

18

জেড.এম.শামসুল  :
মহামারি করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যকে চরম এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সিলেটে বড় ব্যবসায়ীরা কোনো রকম টিকে থাকলেও করোনার ধাক্কায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। অনেকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় সরকার তাদের পাশে দাঁড়াবে, এমন প্রত্যাশা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সিলেটের লক্ষাধিক ক্ষুদ্র, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী। দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ও বর্তমানে খুললেও ব্যবসা বাণিজ্য না থাকায় পথে বসতে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা না পাওয়ার শঙ্কাও করছেন সিলেটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
তাদের বক্তব্য- ব্যাংকগুলো ছোট গ্রাহকদের ঋণ দিতে আগ্রহী নয়। তাই প্রণোদনার টাকা রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও পল¬ী কর্ম-সহায়ক প্রতিষ্ঠান-পিকেএসএফের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হাতে দিতে হবে। সিলেটের গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে সরকারের সহায়তাও চেয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসা সংশি¬ষ্টরা।
এদিকে, সিলেটের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলছেন- ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে আরেকটি সমস্যা দেখা দেবে। তাদেরকে নগদ ফান্ড দিতে পারলে ভালো হতো।
কয়েকজন ক্ষুত্র ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহামন্দার কবলে পড়ে সিলেটে গত তিন মাস অনেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। অনেকে অফিস ভাড়া এবং কর্মচারীর বেতন দিতে গিয়ে সীমিত সঞ্চয়ও শেষ করে ফেলেছেন। উত্তরণের পথ না পেয়ে নিরুপায় ব্যবসায়ীরা কর্মচারী ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সিলেটে কয়েকজন মাইক এন্ড সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ী জানান, করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে এই ব্যবসায় একটা টাকাও আয় নেই। কারণ সব বন্ধ। করোনা শুরুর পর থেকে সভা, সেমিনার হয় না। বিয়ে হলেও বড় অনুষ্ঠান হয় না। পারিবারিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়ে যাচ্ছে। এই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের অফিস ভাড়া, কর্মচারী বেতন, আনুষঙ্গিক বিল ও বাসা ভাড়া দিতে হয়। ইতিমধ্যে কর্মচারী চালাতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সব সঞ্চয় শেষ। এখন বাধ্য হয়ে তারা কর্মচারী ছাঁটাই করছেন।
সিলেটের ফুল ব্যবসায়ীরা জানালেন, কোনোরকম টিকে আছেন তারা। করোনার পর থেকে ফুলের সাথে সম্পর্কিত কোনো অনুষ্ঠানই হচ্ছে না। এর মধ্যে যাবতীয় খরচ তো আছেই।
এভাবে শুধু মাইক আর ফুল ব্যবসায়ী নন, ফল, কাপড়, স্টেশনারি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ সকল প্রকারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে।
চলমান সঙ্কট কাটিয়ে পুনরায় ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে কীভাবে চাঙ্গা করা যায়- এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা না পেলে কঠিন সঙ্কট থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারবে না।