তাহিরপুরে ফের বন্যা, ঢেউয়ে ভাঙ্গছে ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট

23
তাহিরপুরে উত্তাল শনির হাওর।

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
দু’দিন ধরে মুষলধারে টানা বৃষ্টিতে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে হাওর উপজেলা তাহিরপুরে। সেই সাথে ঝড়ো বাতাসে সৃষ্ট ঢেউয়ে ভাঙ্গছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট। কয়েক দিন ধরে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাহিরপুর উপজেলা সদরের সাথে সকল প্রকার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পরেছে।
গত মাসের ২৭ জুন হতে কয়েক দিন হাওরাঞ্চল সহ ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ভারী বর্ষণের ফলে নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় হাওরপারে বিভিন্ন গ্রামের সাথে উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক ও উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে ধীর গতিতে কমে ব্যনার পানি। এ অবস্থায় গত দু’দিন ধরে হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো বাতাসে ফের তাহিরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এতে নতুন করে আবার তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পরে। সেই সাথে উপজেলার সাথে অভ্যন্তরীণ একাধিক সড়কও বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পরে। যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে দক্ষিণকুল, মাহতাবপুর, চিকসা, বালিজুরী, পাতারি, তিওর জালাল, সীমানা, পাতারগাঁও, হোসেনপুর, আনোয়ারপুর, সহ কমপক্ষে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। সেই সাথে গত দুই দিনে ঝড়ো বাতাসে শনি, মাটিয়ান, ফানা ও টাঙ্গুয়া হাওরে সৃষ্ট ঢেউয়ে তাহিরপুর, গোবিন্দশ্রী, শ্রীপুর, জয়নগর, রাম সিংহপুর, মাড়ালা, পনডুপ, নওগা, সোলেমানপুর, আনন্দনগর, উমেদপুর, জয়পুর, কাউকান্দি, বড়দল, মন্দিয়াতা, গোলকপুর সহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক গ্রামে অনেকের বসত বাড়ির ভেঙ্গে যায়।
আবহাওয়ার এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে সেই সাথে পাল্লা দিয়ে নদ নদী ও হাওরে পানি বাড়লে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে বলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার এর সাথে কথা বলে জানা গেছে।
মধ্য তাহিরপুর গ্রামের দোকানী মাসুদ মিয়া, তনি জানান, তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের দক্ষিণ পাশে তার বসত বাড়ির সামনে তিনি একটি ঘরে দোকান দিয়েছিলেন। গত দু দিনের ঢেউয়ে তার দোকান ঘরটি ভেঙ্গে গেছে। তিনি বর্তমানে দোকোনের মালামাল বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
তাহিরপুর বাজার সবজি বিক্রেতা অমিত দাস, তিনি জানান, গত বন্যার সময় তিনি কিছু দিনের জন্য ঘর ছেড়েছেন। বর্তমানেও যেভাবে পানি বাড়ছে তিনি এবারো ঘর ছাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন।
তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদালয়ে প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, গত বন্যায় উপজেলা পরিষদ হতে উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়কটি কিছু স্থানে ভেঙ্গে গিয়েছে। ফের বন্যা ও ঢেউয়ে সড়কটি সম্পূর্ণ রূপে ভেঙ্গে যাবে। দু’একদিন এ রকম থাকলে নৌকা করে উপজেলা সদর যোগাযোগ করেত হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করোনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, গত বন্যার রেষ কাটতে না কাটতে আবারো তাহিরপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। আমি সংবাদ পেয়েছে ইতি মধ্যে তাহিরপুরে অনেক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। আমরা বন্যা আক্রান্ত পরিবারের লোকজনদের খবরা খবর নিচ্ছি।