নবীগঞ্জে গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই কৃষকের, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা

21

তোফাজ্জল হোসেন নবীগঞ্জ থেকে :
করোনাকালে নবীগঞ্জ উপজেলায় ধানের সরকারি দরের সঙ্গে বাজারদর প্রায় সমান হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই কৃষকদের।
গত ১৭ মে থেকে এখানে ধান ক্রয় শুরু হলেও গুদামে কৃষকের উপস্থিতি তেমন নেই। উপজেলায় সরকারিভাবে ধান ও চাল কেনার সময় দেড় মাস পার হলেও খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ মাত্র ১৫৪ টন ধান ও ৭১৭ টন চাল কিনতে পেরেছে। ফলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরকারি ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খাদ্য গুদামের প্রাপ্ত তথ্য মতে নবীগঞ্জ উপজেলায় লটারিতে তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে ৩ হাজার ৯১ টন ধান ও ১ হাজার ৮৬২ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেড় মাস আগে নবীগঞ্জে কৃষকদের গোলায় ধান উঠলেও তাদের কাছ থেকে ধান কিনতে পারছে না সরকারি খাদ্যগুদাম।
স্থানীয় হাটবাজার ও ধানমহাল ঘুরে দেখা গেছে, বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও বাজারে ধানের দর অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীরা চিকন জাতের প্রতিমণ ধান ৯০০-৯৫০ টাকা, ও মোটা জাতের ধান ৮০০-৮৫০ টাকায় ক্রয় করছেন। এছাড়া ভেজা ধান ৭০০ টাকা মণ দরে ক্রয় করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে বাজারদরের চেয়ে সরকারি প্রতিমণ ধানের দরের ব্যবধান হচ্ছে মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। তাও আবার ধান শুকিয়ে দিতে হবে। এ জন্য ধান দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা।
উপজেলার কয়েক জন কৃষক জানান, বাজারে যে দামে ধান কেনা হচ্ছে, সরকারিভাবে এর চেয়ে দাম কম। এ কারণে সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকরা।
নবীগঞ্জ উপজেলা মিল মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ধান ব্যবসায়ী গুরুপদ দাশ ময়না জানান, চলতি মৌসুমে ন্যায্য বাজারমূল্য পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা অনেক খুশি। এতে গত মৌসুমের ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছেন তারা। তিনি বলেন, সরকারি গুদামে শুকনো ধান দিতে হয় কৃষকদের। বাজারে এ নিয়মের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তাই সামান্য কিছু টাকার জন্য ধান শুকিয়ে সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহও নেই কৃষকদের।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গৌড় পদ দে জানান, কৃষকরা বাজারে ধান বিক্রি করলেও সরকারি ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অবশ্যই অর্জিত হবে। তবে আমরা ধান ক্রয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি।
গৌরীপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অলক বৈষ্ণব জানান, গত ১৭ মে থেকে উপজেলায় সরকারের ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও এতে কৃষকের আগ্রহ তেমন নেই। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।