করোনা রোধে টিকা আবিষ্কার

7

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে বড় ধরনের সুখবর পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হালনাগাদ তথ্যের সূত্রে
জানা যায় করোনার টিকা উদ্ভাবনে ১৪০টির বেশি প্রকল্প চালু রয়েছে। এর মধ্যে ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল’ পর্যায়ে আছে ১২৯টি। ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল স্টেজ’ সম্পন্নের পর শুরু হয় ‘ক্লিনিক্যাল স্টেজ’। এই পর্যায়ে ধাপ রয়েছে তিনটি। বর্তমানে করোনার ১৫টি টিকা প্রথম ধাপে রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে ৯টি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের তিনটি টিকা বর্তমানে তৃতীয় ধাপে রয়েছে।
যেকোনো ওষুধ বা টিকার এই ধাপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব ধাপের সাফল্যের ওপর নির্ভর করে কোনো ওষুধ বা টিকার কার্যকারিতা। শুরুতে ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল’ পর্যায়ে একটি টিকা মানুষের পরিবর্তে অন্য কোনো প্রাণীর শরীরে প্রয়োগ করে দেখা হয়, টিকাটি সংশ্লিষ্ট ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে কি না। এরপর ‘ক্লিনিক্যাল স্টেজের’ প্রথম ধাপে এটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয় অল্পসংখ্যক মানুষের শরীরে। এর গবেষকরা জানার চেষ্টা করেন, এটি মানবদেহের জন্য নিরাপদ কি না এবং সংশ্লিষ্ট ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতটুকু কার্যকর। দ্বিতীয় ধাপে এটি প্রয়োগ করা হয় কয়েক শ মানুষের শরীরে। এই ধাপে গবেষকরা বোঝার চেষ্টা করেন, এই টিকা কী মাত্রায় মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এরপর তৃতীয় ধাপে টিকা কয়েক হাজার মানুষের শরীরে প্রয়োগ করে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও কার্যকারিতাসহ অন্যান্য বিষয় যাচাই করা হয়।
দেশের সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও এখন ভ্যাকসিন নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের জিনোম সিকোয়েন্সগুলো এই ভ্যাকসিনের মূল ভিত্তি করে দেশের একটি প্রতিষ্ঠানও টিকা উদ্ভাবনের দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, তিনটি খরগোশের ওপর এই ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গেছে। অনুমোদন মিললে এটি এখন মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে। সব ধাপ পার হতে পারলে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে টিকা বাজারে ছাড়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশের গবেষকরা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন রকম তত্ত্ব ও কৌশলে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কারের যে পথে হাঁটছে, তাতে আশা করা হচ্ছে মোটামুটি কার্যকর কয়েকটি ওষুধ বা টিকা শিগগিরই পাওয়া যাবে। তখন করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে পারবে মানবজাতি। বাংলাদেশের জন্য আরো একটি আশা-জাগানিয়া খবর হচ্ছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ৭২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এখন আরো কিছুদিন আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।