জগন্নাথপুরে করোনা যুদ্ধে প্রশাসনের মানবিক অবদান

9

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে করোনা যুদ্ধে প্রশাসনের ৫ জন কর্মকর্তা জীবন বাজি রেখে প্রতিদিন রেখে চলেছেন মানবিক অবদান। তাঁরা হলেন জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইয়াসির আরাফাত, সহকারি পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) মাহমুদুল হাসান চৌধুরী, জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ও জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মধু সুধন ধর। সহযোদ্ধা হিসেবে সাথে রয়েছেন স্থানীয় সংবাদকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। যদিও সবার আগে জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার কথা ছিল।
দেশে মহামারি করোনা পরিস্থিতি আসার পর থেকে এসব সরকারি কর্মকর্তারা প্রতিদিন মুখ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। মহামারি করোনা থেকে জগন্নাথপুর বাসীকে বাঁচাতে নেয়া হয়েছে একের এক সময় উপযোগী পদক্ষেপ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় গঠন করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এসব কর্মকর্তারা তাঁদের ডিপার্টমেন্টের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাঠে। প্রথমেই জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চালানো হয় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। হাট-বাজারে লোক সমাগম ঠেকাতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় দোকানপাট। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করা হয় বাজার মনিটরিং। জন সচেতনতা আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের করা হয় সতর্ক ও জরিমানা। জোরদার করা হয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ টহল। সরকারি নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষকে কঠোর ভাবে করা হয় সচেতন। কোথাও কোন করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পেলেই তাঁকে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনে রাখার পদক্ষেপ নেয়া হয় দ্রুত। এ সময় অন্যদের বাঁচাতে বিভিন্ন বাড়িকে করা হয় লকডাউন। দেশের অন্য স্থান থেকে কেউ জগন্নাথপুর আসলে তাঁদের রাখা হয় হোম কোয়ারেন্টাইনে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানবিক অবদান রাখা হয় কর্মহীন অসহায় গৃহবন্দি মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দিয়ে। এতে প্রশাসনের সাথে প্রবাসী সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ত্রাণ বিতরণ করেন। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি যখনই কোন ব্যক্তি বা সংগঠন ত্রাণ বিতরণকালে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম এসব উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কিছু ত্রাণ এনে নিজে অথবা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইয়াসির আরাফাত অন্যন্যা অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। এভাবেই প্রতিদিন টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে করা হচ্ছে করোনা মোকাবেলা। যে কারণে দেশের অন্য স্থানের চেয়ে এখনো কম ঝুঁকিতে রয়েছে জগন্নাথপুর। দীর্ঘ প্রায় ৩ মাসে জগন্নাথপুরে মাত্র ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে দেশের অবস্থা আবার স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে গত ৪ দিনে আরো ৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তা জগন্নাথপুর বাসীর জন্য অশনিসংকেত। তাই নিজে বাঁচতে ও পরিবারকে বাঁচাতে এবং দেশেকে সুরক্ষিত রাখতে এখন সর্বস্তরের মানুষকে আরো বেশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।