সিলেট শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৭৮.৭৯ শতাংশ, দ্বিগুণ বেড়েছে জিপিএ-৫

26

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
২০২০ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফল গতকাল রবিবার সিলেটেও একযোগে প্রকাশিত হয়েছে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ২৬৩ জন।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এবারের ফলাফলে পাসের হারের পাশাপাশি জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ২৮৩ জন শিক্ষার্থী। যা গতবছরের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে জিপিএ-৫।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ফলে এবার দশমিক ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে ১৫০৬ জন শিক্ষার্থী। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৭৫৭ জন শিক্ষার্থী। এবছর সিলেটে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এদের মধ্যে পাস করেছে ৯১ হাজার ৪৮০ জন।
সূত্র জানায়, এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৪০৭ জন। এরমধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ১৬ হাজার ১০৪ জন। এরমধ্যে ছেলে ৪৯ হাজার ৮৬১ ও মেয়ে ৬৬ হাজার ২৪৩ জন। পাস করেছে ৯১ হাজার ৪৮০ জন। এরমধ্যে ছেলে ৩৯ হাজার ৫০৪ ও মেয়ে ৫১ হাজার ৯৭৬ জন। ছেলেদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ২৩ এবং মেয়েদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৪৬। আর বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ২৬৩ জন শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞান বিভাগে ২১ হাজার ৬৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১ হাজার ৬০২ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ১৯ হাজার ৫৪২ জন। অংশগ্রহণকারী ১০ হাজার ৩৩২ জন ছেলেদের মধ্যে পাস করেছেন ৯ হাজার ৪৯০ জন এবং ১১ হাজার ২৭০ জন মেয়ে অংশ নিয়ে পাস করেছেন ১০ হাজার ৫২ জন। বিজ্ঞানে মোট পাসের হার ৯০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এরমধ্যে ছেলেদের পাসের হার ৪১ দশমিক ২৭ এবং মেয়ে ৪৯ দশমিক ১৯ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৩২ জন। এরমধ্যে ছেলে ১ হাজার ৯৭৪ এবং মেয়ে ১ হাজার ৯৫৮ জন।
মানবিক বিভাগে ৮৪ হাজার ৫৪৫ জন পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করলেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৮৪ হাজার ২৯৬ জন। এরমধ্যে পাস করেছেন ৬৩ হাজার ১৮ জন। মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নেওয়া ৩৩ হাজার ৯৮৬ বালকের মধ্যে পাস করেছেন ২৫ হাজার ২০৫ এবং বালিকাদের মধ্যে ৩৭ হাজার ৮১৩ জন। মানবিকে মোট পাসের হার ৭৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। এরমধ্যে ছেলেদের পাসের হার ৭৪ দশমিক ১৬ এবং মেয়েদের পাসের হার ৭৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। মানবিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ১৭০ জন। এরমধ্যে ছেলে ৪২ এবং মেয়ে ১২৮ জন।
ব্যবসা শাখায় ১০ হাজার ২২২ জন পরীক্ষার্থী থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১০ হাজার ২০৬ জন। এরমধ্যে পাস করেন ৮ হাজার ৯২০ জন। এই বিভাগে ৫ হাজার ৫৪৩ জন ছেলে অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ৪ হাজার ৮০৯ জন এবং মেয়েরা ৪ হাজার ৬৬৩ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪ হাজার ১১১ জন। এই বিভাগে মোট পাসের হার ৮৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। এরমধ্যে ছেলেদের পাসের হার ৮৬ দশমিক ৭৬ এবং মেয়েদের পাসের হার ৪৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। ব্যবসা শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৬১ জন। এরমধ্যে ছেলে ৬৫ এবং মেয়ে ৯৬ জন।
সূত্র আরো জানায়, এবার সিলেট বোর্ডের মধ্যে সিলেট জেলায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা বোর্ডের সর্বোচ্চ। এর মধ্যে মেয়েদের হার ৮০ দশমিক ৪২ শতাংশ ও ছেলেদের হার ৮১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অপরদিকে মৌলভীবাজার জেলায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ ছেলে ও ৭৯ দশমিক ৬১ শতাংশ মেয়ে। সুনামগঞ্জ জেলায় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও মেয়ে ৭৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। হবিগঞ্জ জেলায় পাস করেছে ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা সিলেট বোর্ডে সর্বনিম্ন। এদের মধ্যে ছেলে ৭২ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং মেয়ে ৭২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। সিলেট জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ১৮০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে ১ হাজার ৫৩ জন ও মেয়ে ১ হাজার ১২৭ জন। হবিগঞ্জের ৬০৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এদের মধ্যে ২৯০ জন ছেলে এবং ৩১৫ জন মেয়ে। মৌলভীবাজারে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৬৫ জন। এর মধ্যে ৫২৭ জন ছেলে এবং ৫৩৮ জন মেয়ে। সুনামগঞ্জ জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ৪১৩ জন। এর মধ্যে ২১১ জন ছেলে এবং ২০২ জন মেয়ে।
এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে এবার এসএসসি পরিক্ষার্থীদের মোবাইলফোনের মাধ্যমে ফলাফল দেয়া হয়। এবার কেবল ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন। যেসব পরীক্ষার্থী নির্ধারিত নিয়মে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে প্রাকনিবন্ধন করেছেন, তাদের মুঠোফোন নম্বরে খুদে বার্তা পাঠিয়ে ফল জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।