রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে টুকেরবাজারে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ১২, আটক ৮

8

স্টাফ রিপোর্টার :
শহরতলীর টুকেরবাজারে রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ অনন্ত ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সংঘর্ষকালে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে টুকেরবাজার মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সাথে স্থানীয় সাহেবেরগাঁওর সিরাজুল হক ও আকমল হোসেনের লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার জালালাবাদ থানার এসআই হান্নান বাদি হয়ে উভয়পক্ষের আটককৃতসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো সাড়ে ৪০০ জনকে আসামী করে পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে স্থানীয়দের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। থানা পুলিশসহ এলাকার মুরব্বিরা একাধিকবার এই বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। গত রমজান মাসে স্থানীয় লোকজন রাস্তার মধ্যখানে বাঁশ দিয়ে মাছের আড়তে ট্রাক প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। গতকাল বুধবার রাতে রাস্তার উপর পাঁকা পিলার দিয়ে তারা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাজারে মাছ নিয়ে দুটি ট্রাক এলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা পিলার তুলে খুলে দিয়ে ট্রাক ঢুকাতে চান। তখন তাদের উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় ৪ পুলিশ সদস্যসহ ১২ জন আহত হন।
টুকেরবাজার মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান বলেন, সরকারি রাস্তা দিয়ে মাছ বাজারের গাড়ি প্রবেশ করতে বেশকিছুদিন ধরে বাঁধা প্রদান করে আসছিলেন স্থানীয় সিরাজুল হক ও আকমল হোসেন গংরা। এ বাঁধা তুলে নিতে তারা আমাদের কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু, আমরা চাঁদা না নিয়ে থানায় অভিযোগ করি। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ নিয়ে দুটি ট্রাক টুকেরবাজার মৎস্য আড়তে আসে। কিন্তু রাস্তায় পাঁকা পিলার থাকায় ট্রাক আড়তে প্রবেশ করতে পারেনি। তখন সিরাজুল হক ও আকমল হোসেন গংরা ট্রাক থেকে মাছ লুট করে। এসময় বাজারের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা আটকাতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মুহিবুর রহমান আরো বলেন, ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনের মালিকানাধিন বাজার সংলগ্ন হাজী সফাত উল্লাহ ফিলিং স্টেশনে হামলা ও ভাংচুর চালায়। সেখানে থাকা সভাপতির একটি প্রাইভেট কার ভাংচুর করে তারা এবং প্রায় দুই লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সংঘর্ষে জড়িত পক্ষ সিরাজুল হক ও আকমল হোসেনসহ দু’পক্ষের ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ব্যপারে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওকিল উদ্দিন আহমদ বলেন, রাস্তা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে টুকেরবাজার মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনায় সংঘর্ষে জড়িত দু’পক্ষের ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় জালালাবাদ থানার এসআই হান্নান বাদি হয়ে উভয়পক্ষের ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো সাড়ে ৪০০ জনকে আসামী করে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।