১৫ জুনের পর করোনার টিকা দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
কোভিড-১৯ এর টিকা পাওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্য এবং চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে আইইডিসিআর। এসব প্রতিষ্ঠানের টিকা আবিষ্কার হলে তারা যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়েল দেবে সেখানে বাংলাদেশ অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখন এসব দেশ রাজি হলেই দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়েল শুরু হতে পারে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সম্প্রতি বলেছেন, ১৫ জুনের পর থেকে দেশে করোনাভাইরাসের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে। করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়ার জন্য জাতীয় রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) চীন এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে জানান তিনি।
এখন পর্যন্ত যেসব করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের কাজ চলছে তার মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক। এই দুই প্রতিষ্ঠানই দাবি করছে প্রাণীর শরীরে তারা টিকা প্রয়োগে সফল হয়েছে। এরপর মানুষের শরীরে টিকাগুলো প্রয়োগ করা হয়েছে যার ফল পেতে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর মানুষের শরীরে টিকার ফল আশা জাগানোর মতো হলে ১৫ জুন থেকে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করার বিষয়ে অনুমোদন দেয়া সম্ভব বলে দাবি করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
জানতে চাইলে আইইডিসিআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বলেন, আমরা যুক্তরাজ্য এবং চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছি। আমরা তাদের বলেছি আমরা বাংলাদেশে এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়েল দিতে চাই। এখন তারা আমাদের টিকা দিতে চাইলেই আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়েল দিতে পারব। তবে টিকা আবিষ্কারের পথে রয়েছে। এ বিষয়ে সরকার না আইইডিসিআর যোগাযোগ করেছে জানতে চাইলে বলেন, সরাসারি সরকারী পর্যায়ে যোগাযোগ হয়নি। তবে আইইডিসিআর যেহেতু সরকারী প্রতিষ্ঠান তাই এই যোগাযোগকে এক অর্থে সরকারী যোগাযোগ বলা চলে।
কোভিড-১৯ এর যেসব ওষুধ বিশে^ আলোচিত হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশ প্রস্তুত করেছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু টিকা আবিষ্কার হলে বাংলাদেশ এসব টিকা উৎপাদন করতে পারবে জানতে চাইলে এএসএম আলমগীর বলেন, এখনও যেহেতু টিকা আবিষ্কার হয়নি, প্রচেষ্টা চলছে তাই এই মুহূর্তে এ ধরনের কোন উদ্যোগ নেয়া কঠিন। আর ওষুধগুলো যেহেতু আগে থেকেই অন্যরোগের প্রতিষেধক হিসেবে ছিল তাই এগুলো সহজে উৎপাদন করা গেছে। তিনি বলেন, এখন টিকার ক্ষেত্রে কেউ তাদের নিজেদের গবেষণায় পাওয়া ফলাফল নিশ্চই দিতে চাইবে না।
তাহলে টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় বাংলাদেশকে বাইরের দেশের ওপরই নির্ভর করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাপ্তি কতটা সহজ হবে জানতে চাইলে আইইডিসিআর এর আরেক কর্মকর্তা বলেন, ধরা যাক চীন টিকা উৎপাদন শুরু করল তাহলে চীন কি তার দেশের মানুষকে টিকা না দিয়ে আমাদের দেশে টিকা সরবরাহ করবে। এজন্য টিকা অন্য কোন দেশ আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে আমরা যাতে নিজেরা উৎপাদন করতে পারি এমন কোন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। সেক্ষেত্র সরকারকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এককভাবে এই টিকা উৎপাদন করে বাজারজাত করা সম্ভব নয়।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট দেশটির করোনা রোগীদের জন্য টিকা উৎপাদনের জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। তবে বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠান এমন আশা জাগানো খবর এখনও দিতে পারেনি।