মানুষের জীবনের প্রয়োজনটা অনেক বেশি : প্রধানমন্ত্রী

13

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষের জীবনের প্রয়োজনটা অনেক বেশি। মানুষের ক্ষতি হবে, মৃত্যু হবে ভেবে যতই আমরা আটকে রাখি না কেন, ক্ষুধার জ্বালাটা তার থেকে অনেক বেশি। মানুষের অন্ন জোগাতে হবে, তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, জীবন চলমান রাখতে হবে। ছোট ছোট শিশুরা কতদিন ঘরে আটকে থাকবে? তাদের শিক্ষার পরিবেশটা তৈরি করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ে সারাদেশে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ কর্মহীন পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মতো অদৃশ্য এক শক্তির কারণে সারাবিশ্বই আজ স্থবির হয়ে গেছে। সারাবিশ্বে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। আমাদের দেশেও আড়াইশর মতো লোক মারা গেছে। কিন্তু পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে দিনে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। সবার আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই যে অদৃশ্য শক্তির হঠাৎ আক্রমণ, যার ফলাফল আজ বিশ্ববাসী ভোগ করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের মতো ভূ-খণ্ডের দিক থেকে ছোট এবং অনেক বেশি জনসংখ্যার দেশ। আমরা মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া, জীবন মান নিশ্চিত রাখা, জীবনটাকে সচল রাখা, অর্থনীতিকে গতিশীল রাখা কীভাবে করতে পারি, সে চিন্তাটাই আমাদের আগে হয়েছে। শুরু থেকে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। একারণেই হয়তো অন্যান্য দেশে যেভাবে মৃত্যু হয়েছে বা আক্রান্ত হয়েছে, তা থেকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।’
করোনাভাইরাসের মতো অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে পৃথিবীর কোন দেশই করতে পারছে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীতে অনেক অস্ত্র ও অর্থের শক্তিধর দেশ দেখেছি। কিন্তু করোনাভাইরাসের মতো একটা অদৃশ্য শক্তিকে কেউ মোকাবেলা করতে পারছে না। এই করোনাভাইরাসের কাছে সব শক্তি পর্যুদস্ত হয়ে গেছে। এদের কাছে সবাইকে স্যারেন্ডার করতে হয়েছে। সেটাই পুরো বিশ্বের জন্য দুর্ভাগ্য। তবে এতে প্রকৃতি লাভবান হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিম আছেন। সাধারণত এই রমজান মাসে সকলেই মসজিদে যাই। তারাবির নামাজকালাম পড়ে সেখানে মসজিদের ভালো একটা ইনকাম হয়। মসজিদ কমিটি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং বিত্তশালীরা দান করে যাচ্ছে এখনও। সেই খবর আমি রাখি। তারপরও আমি মনেকরি আমাদের একটা দায়িত্ব আছে। আমি ইতিমধ্যে একটা তালিকা করতে বলে দিয়েছি যে আমি সকল মসজিদে ঈদ উপলক্ষে কিছু আর্থিক সহায়তা দিবো। আমাদের প্রতিটা এলাকার মানুষের কষ্টাটা দূর করাই আমার মূল লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এন-৯৫ মাস্ক কিন্তু সাধারণ মানুষের পড়ার জন্য না। এটা ডাক্তার, নার্স বা যারা করোনাভাইরাস রোগীকে সেবা দিবে তাদের জন্য। এটা সাধারণভাবে পড়া বা ব্যবহার করার কোন যৌক্তিকতা বা প্রয়োজন নাই। ঘরে তৈরি করা মাস্কও পড়া যায়। অর্থাৎ আপনার শ্বাস প্রশ্বাস যেন অন্যের কাছে না যায় এবং অন্যেরটা যেন আপনার কাছে না আস সেটা সুরক্ষিত রাখার জন্যই মাস্ক পড়া। আর ওইটা হচ্ছে চিকিৎসা যারা দিবে, হাসপাতালে রোগীর পাশে থাকবে, রোগী দেখবে তাদের পড়তে হবে। কাজেই এটা অযথা না পড়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়াই ভালো।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘ইতিমধ্যে অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য ১৭টি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজকে ১৮তম প্যাকেজে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউণ্ডেশনকে ৫০০ কোটি করে সর্বমোট ২০০০ কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। তাতে সর্বমোট এক লাখ এক হাজার ১১৭ কোটি টাকা যা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ।’