বিনিয়োগ-রফতানি বাড়বে

9

করোনা ভাইরাসের বহুল সংক্রমণে সারা বিশ্বের যে চরম সঙ্কট সেখানে স্বাস্থ্য ও জীবন ঝুঁকিকে সামনে আনা হলেও, পরবর্তীতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক ব্যবসাবাণিজ্যে। ইতোমধ্যে তা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। গোটা বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় যে মাত্রায় বিপর্যয় নামে তার সরাসরি আঘাত হানে আন্তর্জাতিক ব্যবসাবাণিজ্যেও। স্মরণকালের ইতিহাসে আমদানি-রফতানির এমন স্থবিরতা আগে আসেনি। সব ধরনের বিপর্যয়কে মোকাবেলা করে করোনাযুদ্ধ থেমে যাওয়ার পরের ধাপ কেমন অচলাবস্থার আবর্তে পড়বে, তা নিয়েও বিশিষ্টজনেরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। চীনের উহান শহর থেকে উদ্ভূত এই করোনা প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সূচকে বিপন্ন অবস্থার মুখোমুখি হয়। বৈশ্বিক বিনিয়োগেও আসে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব। এখনও করোনা যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব হয়নি আন্তর্জাতিক দুনিয়ায়। তবে অবরুদ্ধতার কঠিন বেড়াজালের ফাঁকফোকরে ব্যবসাবাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হচ্ছে লকডাউন শিথিলের কারণে। সেখানে নতুন আশার আলোর দেখা মিলছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং করোনার কারণে চীনের প্রতি ইউরোপ আমেরিকার বিরূপ মনোভাবে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অনেকেই। এশিয়ার শিল্পোন্নত জাপান তার বৈদেশিক বাণিজ্যে চীনকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করছে। যা বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক পরিসরে এক শুভ সঙ্কেতের আভাস হিসেবে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। দেশের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, অতিসত্বর বেজা, বিডাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নতুনভাবে ক্রয়াদেশ বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত মিলছে। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আর বিনিয়োগে বাংলাদেশের ইতিবাচক নির্দেশনাকে যথাযথ কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে সচল করতে জরুরী উদ্যোগ একান্ত আবশ্যক।
বিনিয়োগ আর রফতানির সহযোদ্ধা উদ্যোক্তারা নব উদ্যমে নিজেদের কর্মদ্যোতনাকে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলতে বিশেষ নজর দিচ্ছেন। শুধু পোশাক শিল্প নয়, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি আদেশও পুনরায় আসতে পারে। তবে সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি হবে না, অপেক্ষা করতে হবে। বছরব্যাপী যেসব আদেশ স্থগিত কিংবা বাতিল হয়েছে তা আবার ফিরে আসতে পারে।
ইউরোপ-আমেরিকায় অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের স্থগিতাদেশ বাতিল করেছে। তারা বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের কাছে তাদের পণ্য সরবরাহের আবেদনও জানায়। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও জাপান এই মুহূর্তে চীন নয়, বাংলাদেশকে নিয়েই ভাবছে। জাপান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। এর আগেও বহু বিনিয়োগ জাপান এদেশে করেছে। সামনে আরও করার সম্ভাবনা বাড়ার দিকে, যা দেশের জন্য একটি অতি সম্ভাবনাময় শুভসঙ্কেত।