সৌদি আরবকে ট্রাম্পের হুমকি, তেল সরবরাহ কমিয়ে দিলে সামরিক সহায়তা হারাতে হবে

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে হুমকি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তারা যদি তেল সরবরাহ কমিয়ে না দেয়, তবে মার্কিন সামরিক সহায়তা হারাতে হবে।
রাশিয়ার সঙ্গে তেলের দাম যুদ্ধ বন্ধে যখন সৌদি আরবকে চাপ দিচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র, তখন রিয়াদকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এই হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
২ এপ্রিল সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ফোনে ট্রাম্প বলেন, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক যদি তেল উত্তোলনে কাটছাঁট না করে, তবে সৌদি আরব থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে আইন পাসে আইনপ্রণেতাদের বিরত রাখতে তিনি অক্ষম হবেন।
এই হুমকি দুই দেশের মধ্যকার ৭৫ বছরের কৌশলগত সম্পর্ককে ওলটপালট করে দিয়েছে। এর আগে এমন কোনো দৃষ্টান্ত দেখা যায়নি।
করোনা মহামারীর দরুন তেলের চাহিদা কমে গেছে। কাজেই তেল সরবরাহ কাটছাঁটে মার্কিন চাপ একটি বৈশ্বিক চুক্তির দিকে নিয়ে গেছে। হোয়াইট হাউস কূটনৈতিকভাবে এতে জয়ী হয়েছে।
তেল উত্তোলন কমিয়ে আনার ঘোষণার ১০ দিন আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে এই হুমকি দেন ট্রাম্প। এতে সৌদি আরবের কার্যত শাসক যুবরাজ হতবাক হয়ে যান।
এসময় ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা গোপনীয়ভাবে চালিয়ে যেতে নিজের সহকারীদের কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে তেলের চাহিদা তলানিতে গিয়ে ঠেকার পর কোম্পানিগুলোকে রক্ষায় ট্রাম্পের জোরালো ইচ্ছার প্রতিফলন ছিল যবরাজের সঙ্গে তার এই আলোচনা।
করোনা প্রকোপে বৈশ্বিক অর্থনীতি অচল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় মার্কিন তেল শিল্পও বিপর্যয়ে পড়ে যায়।
এর আগে ওপেকের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সমালোচনা ছিল, তারা সরবরাহ কমিয়ে আমেরিকানদের জ্বালানি খরচ বাড়াচ্ছে। এবার তার সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে যুবরাজে হুমকি দিয়ে বসলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সৌদি নেতৃবৃন্দকে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য করতে বিধিনিষেধ আরোপ করা থেকে কংগ্রেসকে বিরত রাখতে এর বাইরে বিকল্প কোনো উপায় নেই।
বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলে সৌদি নেতাদের ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, যখন আপনারা আমাদের কোম্পানিগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন, তখন আপনাদের শিল্প-কারখানাকে আমরা রক্ষা করছি।
হোয়াইট হাউসে বুধবারে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল রয়টার্স। জবাবে তিনি বলেন, তাকে এ বিষয়ে বলতে হবে না। আমি মনে করি, পুতিন ও যুবরাজ দুজনেই যৌক্তিক মানুষ। তারা জানতো, তারা সমস্যায় পড়বে। এরপরেই এমনটি ঘটল।
যুবরাজকে কী বলেছেন জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, একটি চুক্তি করতে তারা এক কঠিন পরিস্থিতিতে ছিল। তখন টেলিফোনে তার সঙ্গে আমার কথা হয় এবং তেল উত্তোলন কমাতে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হই আমরা।
যুবরাজকে ট্রাম্পের ফোনের সপ্তাহখানেক আগে সৌদি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে রিপাবলিকান সিনেটর কেভিন ক্রামার ও ড্যান সুলিভান একটি আইনের প্রস্তাব করেন। এতে বলা হয়, সৌদি যদি তেল সরবরাহ কমিয়ে না দেয় তবে প্যাট্রিয়টসহ মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও সেনাদের প্রত্যাহার করে নিয়ে আসা হবে।