করোনায় মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী অসন্তোষ

4

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। মারণ ভাইরাস রুখতে কংগ্রেস যে পরামর্শগুলি দিয়েছিল, তার অধিকাংশই মেনে চলা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। করোনার সময় আরেপিত লকডাউন নিয়ে সরকার মমত্ববোধ ও তৎপরতা দেখাতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেছেন।
গ্রামীণ ও শহরতলিতে মানুষের দুর্দশা কাটাতে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন সোনিয়া। একাধিক পরামর্শের কথা বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একাধিক চিঠি দেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী বৈঠকের পর সোনিয়া জানিয়েছেন, দুর্ভাগ্যবশত তারা কার্পণ্যের সঙ্গে আংশিক পরামর্শ গ্রহণ করেছে। আরও মমত্ববোধ, উদার মানসিকতা এবং ততৎপরতা দেখানো উচিত ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের। তবে তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
সোনিয়ার আরও অভিযোগ, প্রত্যেকে ভারতীয় যখন আমাদের একজোট হয়ে করোনা মোকাবিলা করা উচিত, বিজেপি তখন সাম্প্রদায়িকতা ও হিংসার ভাইরাস ছড়াচ্ছে। সামাজিক সম্প্রীতিতে বিস্তর ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এই ক্ষতি মেটাতে কংগ্রেস কঠোর পরিশ্রম করবে। গত তিন সপ্তাহে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেশে মাত্রাতিরিক্ত হারে ও গতিতে বেড়েছে বলেও দাবি করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
এর মধ্যে দেশজোড়া লকডাউনে ভারতে অন্তত চার কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের জীবনযাপন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে বলে নিজেদের রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর এই শ্রমিকদের আবার জীবনে স্থিতি আনতে আরও অনেক সময় চলে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
লকডাউনের ঘোষণা করায় মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ হাজার শ্রমিক শহরাঞ্চল থেকে তাদের গ্রামের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। এর ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিও প্রভাবিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অর্থনীতিতে এই প্রভাব টের প্রকট হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ভিন দেশে কাজ করা যত মানুষে এই সময় দেশে ফিরেছেন, তার তুলনায় দেশের মধ্যে গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা প্রায় আড়াই গুণ বেশি বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
লকডাউন, কাজ হারানো এবং সামাজিক দূরত্ববিধি পালন পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনে চূড়ান্ত যন্ত্রণা নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ভারত ছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। এই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও খাদ্যের যোগানের দিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া জরুরি।