দিরাইয়ে বিষক্রিয়ায় মারা গেছে ১১টি গরু

13

আল-হেলাল সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় পুকুরের পানি পান করে মারা গেছে ১১টি গরু। রবিবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের সুতারগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আধ ঘন্টার ব্যবধানে ১১টি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুকুরের পানি সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছেন।
জানা যায় সুতারগাঁও গ্রামের পার্শবর্তী মাঠে পড়ে আছে সুতারগাঁও গ্রামের দিগেন্দ্র দাসের ৩টি, দিলিপ দাসের ২টি, শিশির মোহন দাসের ১টি, তিলক মোহন দাসের ১টি, হরিলাল দাসের ১টি, রায় মোহন দাসের ১টি, পিন্টু দাসের ১টি ও চাতলপাড় গ্রামের নজির খানের ১টিসহ ১১ টি গরুর নিতর দেহ। গ্রামবাসী জানান পার্শবর্তী চাতলপাড় গ্রামের আনিস উল্লার পুত্র আবু সালাম সরকারী জায়গার ছোট ছোট ডুবা দখল করে মৎস্য চাষ করে আসছেন। কিছুদিন পূর্বে রাস্তায় মাটি ভরাটের ফলে একটি গর্ত হয়, সেখানে বৃষ্টির পানি জমে পুকুরের মতো হলে তা দখলে নিয়ে তাতে মাছের রেনু ফেলার জন্য শনিবার বিষ প্রয়োগ করেন। প্রতিদিনের মতো রোববার সকাল ৯ টার দিকে গ্রামের পঞ্চায়েতি ৩জন রাখাল বিভিন্ন মালিকের প্রায় অর্ধশতাধিক গরু নিয়ে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মাঠের দিকে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে বিষ প্রয়োগকৃত ডুবার পানি পান করে কয়েকটি গরু। পানি পান করার কিছুক্ষনের মধ্যেই গরুগুলো লাফাতে লাফাতে মাটিতে পরে মারা যায়। গ্রামের শিশির মোহন দাস বলেন, সরকারীয় জায়গার সবগুলো ডুবা দখল করে মাছ চাষ করে আসছেন পার্শবর্তী গ্রামের আবু সালাম। আমাদের গবাদি পশুগুলোকে মাটে পানি খাওয়ানোর ব্যবস্থা নেই। কিছুদিন পুর্বে সরকারী সড়কে মাটি তোলার ফলে বৃষ্টির পানি জমে পুকুরের মতো হয়। সেটিও দখলে নিতে তিনি বিষ প্রয়োগ করেন, রবিবার সকালে আমাদের গ্রামের পঞ্চায়েতি রাখালরা গরু নিয়ে হাওরে যাওয়ার পথে কয়েকটি গরু সেই পুকুরের পানি পান করার কিছুক্ষনের মধ্যে একে একে ১১টি গরু মারা যায়। চাতলপাড় গ্রামের সুজন খান বলেন, গরু মারা যাওয়ার দৃশ্য দেখে রাখালরা চিল্লাচিল্লি শুরু করলে গ্রামের লোকজন দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। করোনা ভাইরাসে হাওরে একের পর এক গরু মারা যাচ্ছে শুনে সবার মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। গ্রামের মহিলারা বাচ্চাদের ঘরে আটকে রেখে দরজা জানালা বন্ধ করে দেন। আবু সালাম বলেন, গ্রামের পঞ্চায়েতের আদেশে রাস্তায় মাটি তুলার জন্য পুকুরটি আমি শুকিয়ে দিয়েছি, তাদের অনুমতি নিয়েই সেখানে মাছের পোনা উৎপাদনের জন্য চুন প্রয়োগ করা হয়েছে, কোন ধরনের বিষ দেয়া হয়নি। উপজেলা পানি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এফ এম বাবরা হ্যামলিন বলেন, গরুগুলো কি কারণে মারা গেছে তা সঠিক করে বলা সম্ভব হচ্ছেনা, নমুনা সংগ্রহ করে টেষ্টের জন্য পাঠাবো, রিপোর্ট আসার পরই তা বলা যাবে। তবে ধারণা করছি গরুগুলো বিষক্রিয়ার কারণেই মারা গেছে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম বলেন, পুকুরের পানি সংগ্রহ করা হয়েছে। তাতে বিষ দেয়া হয়েছে কিনা তা জানার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। দিরাই থানা ওসি কেএম নজরুল ইসলাম জানান, যেহেতু ১১টি গরুর মৃত্যুর ধরণ এক রকম, তাই মৃত দুটি গরু ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট আসার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।