৬৬ দেশে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস, মৃত তিন হাজার ছাড়াল

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসে প্রতিনিয়ত দীর্ঘায়িত হচ্ছে লাশের মিছিল। সোমবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৯১২ জনই চীনা নাগরিক। নিয়ন্ত্রিত চিকিৎসায় গত দুই দিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত আরও ৬২ জন মারা গেছে। এর মধ্যে শুধু চীনেই মারা গেছে ৪২ জন। এদিকে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইরানে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৮৯জন। ভারতের দিল্লী ও তেলেঙ্গানায় দুই করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৬৬ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস।
চীনে সুস্থ হওয়ার হার বাড়লেও কমছে না এর প্রকোপ। দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরানে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ডিসেম্বরে শুরু হওয়া মরণঘাতী এ ভাইরাসটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে চীনসহ বিভিন্ন দেশের আড়াই হাজার নাগরিক আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৮৮ হাজার ৯১২। চীনের হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা আরও আড়াই হাজার নাগরিককে বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনা থেকে রেহাই পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। ভাইরাসটিতে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ইরানে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছে ৫৪ জন। যেখানে দেশটির একজন পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় সহগ্রাধিক। এদিকে ইরানের মতোই ভয়াবহ করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ইতালিতে। এখন পর্যন্ত সেখানে ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার সাতশ জনে পৌঁছেছে। মৃতের সংখ্যায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও চীনের পর আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে সোমবার পর্যন্ত আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ২২ জনের প্রাণ গেল। এ পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২১২ জন। এছাড়া জাপানী প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ছয় যাত্রী মারা গেছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই প্রমোদতরীর যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৭০৫ জন।
রবিবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা করতে একসঙ্গে প্রায় তিন লাখ টিম নামাচ্ছে ইরান, মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করবে তারা।
এ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া সবগুলো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাস।
দিল্লী ও তেলেঙ্গানায় ২ করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত ॥ ভারতের রাজধানী দিল্লী ও তেলেঙ্গানা প্রদেশে দুই জন নোভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই দুই রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে ও তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে সোমবার দেশটির সরকার জানিয়েছে। নতুন করে এই দুই রোগী শনাক্ত হওয়ায় ভারতে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ জনে দাঁড়িয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে কেরল রাজ্যে দেশটির প্রথম নোভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিল। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দিল্লীতে শনাক্ত হওয়া রোগী ইতালি ভ্রমণ করে ফিরেছেন আর তেলেঙ্গানায় শনাক্ত হওয়া জন দুবাই থেকে দেশে এসেছেন।
কয়েক সপ্তাহ আগে কেরলের তিন শিক্ষার্থী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছিল ভারত। সম্প্রতি ওই তিন শিক্ষার্থী রোগমুক্ত হয়েছেন এবং পরীক্ষায় তাদের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি না পাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
চীন থেকে ফেরত আসা ভারতীয়দের কয়েকটি দলকে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে কয়েকজন দুই সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন।
উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে এখন নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ভারতে পাঁচ জন, পাকিস্তানে চার জন এবং নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানে একজন করে রয়েছেন।