শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে সম্বনিত পরীক্ষা

20

সমন্বিত না হলেও শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত হয়েছেন দেশের বেশির ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯টিতে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এগুলোতে প্রতিবছর প্রায় ৫৫ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এ জন্য ভর্তি পরীক্ষায় কয়েক লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছোটাছুটি করতে হয়। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মানসিক চাপ সইতে হয়, তেমনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। আবার সব বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের রাত যাপনের ব্যবস্থাও নেই। গড়ে উঠেনি আবাসিক হোটেল। ফলে অনেককেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভর্তি বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দিতেই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি সামনে চলে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিভিন্ন সময়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ কমাতে কয়েক বছর ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত বা গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে এক সভা হয়েছে।
সভাশেষে ইউজিসির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। উপাচার্য পরিষদের বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য জানানো হয়েছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তিন উপাচার্যের অনুপস্থিত থাকায় আবার একটি আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। ফলে সমন্বিত বা কেন্দ্রীয় যেকোনো পদ্ধতির পরীক্ষাই হোক না কেন, এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ নিয়ে আশঙ্কা। কারণ এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা জানাননি।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে। গত বছর অর্থাৎ চলতি শিক্ষাবর্ষে সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা একসঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধান চারটি বিশ্ববিদ্যালয় না এলেও খুব একটা যে ক্ষতি হবে তা নয়। একটি উদাহরণ তো তৈরি হোক। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ কমাতে ব্যবস্থাটি যথাযথ বলে মনে করি আমরা।