বিএনপি তো অ্যানালগ, ডিজিটাল না – আইনমন্ত্রী

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভোটার তালিকা হালনাগাদ আইন পাসের আগে বিএনপির বিদ্রƒপ প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ওনারা (বিএনপি) ভোটারবিহীন নির্বাচন করেন। ওনারা তো অ্যানালগ, ডিজিটাল না। আমরা জনস্বার্থ রক্ষায় আইন করছি।
রবিবার জাতীয় সংসদে ভোটার তালিকা সংশোধন বিল-২০২০ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী। পরে আইনটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাইয়ের প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এ নিয়ে এ সব কথা বলেন। বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা এ আইন করা নিয়ে বিদ্রƒপ করে বলেন, যে দেশে দিনের ভোট রাতে হয়, সেই দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কী প্রয়োজন? জবাবে আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বলেন, বিরোধীদলীয় সদস্য যা বলেছেন, আমি কিন্তু আশ্চর্য হইনি। ওনাদের তো ভোট করার অভ্যাস নেই।
জনমত যাচাইয়ের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রয়োজন হয় যখন মানুষ ভোট দিতে পারে। যে দেশে দিনের ভোট রাতে হয়, ভোটে পুলিশ প্রশাসন ক্যাডার বাহিনী, যে দেশের মৃত মানুষরা কবর থেকে উঠে এসে ভোট দেয়। যে দেশে খুশিতে ঠেলায় ভোট দিতে ভোটাররা লাইনে দাঁড়ায়, সেই দেশে ভোটার তালিকা থাকা বা না থাকাতে কী আসে যায়? ক্ষমতাসীন আস্থাভাজন ছাড়া যেহেতু প্রায় কেউই ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারে না। সেহেতু ভোটার তালিকায় তাদের নাম নির্ভুলভাবে আসলেই চলে।
তিনি বলেন, জনগণের করের টাকা বাঁচাতে মানুষ যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে অলীক স্বপ্নে আশাহত না হয় এ প্রেক্ষাপটে হালনাগাদ দূরে থাকুক, তালিকা আদৌ প্রয়োজন আছে কি-না সেটার জনমত যাচাই করা হোক।
একই দলের হারুনুর রশীদ বলেন, ভোটার তালিকার প্রয়োজনটা কী? আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব এর জন্যই তো ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। হালনাগাদ করে আমাদের কী হবে? যদি নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে না পারে, ভোটাররা যদি ভোট দিতে যেতে না পারে তাহলে ভোটার তালিকা করে কী হবে? জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন আছে?
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সমস্ত আইন করছে বিধিবিধান করছে, এগুলো কি মানছি? সরকারি দলের সদস্যরা যেভাবে চাচ্ছেন সেভাবেই নির্বাচন করা হবে, সেভাবেই নির্বাচনী কার্যক্রম চলবে, সেভাবে নির্বাচনী উৎসব চলবে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে রীতিমত যুদ্ধ হচ্ছে। প্রার্থীদের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নীরব, প্রশাসন নীরব, কেউ কোনো কাজ করছে না। আইন প্রণয়ন বাদ দেন, দেশ যেভাবে ফ্রি স্টাইলে চলছে এভাবে একদলীয়ভাবে দেশ চালান। কোনো আইন প্রণয়নের কোনো প্রয়োজন নেই।
জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় সদস্যরা যা বলেছেন আমি কিন্তু আশ্চর্য হইনি। ওনারা করলেন ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার। ওনারা তো এ কথা বলবেন। ওনারা ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটার ছাড়া নির্বাচন করলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ক্ষমতায় বসালেন। এ হচ্ছে ওনাদের নিয়ম-কানুন।
তিনি বলেন, আমরা জনগণের কথা বলি। জনস্বার্থ দেখি। আইনটা ১৯৮২ সাল থেকে শুরু হয়েছে, এই আইনটা ২০০০ সালে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আসছে। আমরা আইন প্রণয়ন করছি। ওনারা তো দেখেন না, সারা বছরই ভোটার তালিকা কার্যক্রম হচ্ছে। ভাঙা রেকর্ডের মতো পুরনো কথা বলেন। ওনারা তো অ্যানালগ, ডিজিটাল না। আমরা জনস্বার্থ রক্ষায় আইন করছি।