সীমান্তে হত্যা বন্ধে আইনি নোটিশ

13

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দ্বারা বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বন্ধে আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান মামুন এ নোটিশ পাঠান। গণমাধ্যমকে তিনি নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
নোটিশে স্বরাষ্ট্রসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, প্রতিরক্ষাসচিব, সেনাপ্রধান এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ডিরেক্টর জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গত ২৪ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তিন দিনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছে। এছাড়া মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিএসএফ কর্তৃক এক হাজার ১৪৪ বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়।
নোটিশে আরও বলা হয়, ভারতের সঙ্গে মোট ছয়টি দেশের সীমান্ত রয়েছে। সেগুলো হলো- চীন, পাকিস্তান, মিয়ানমার, নেপাল, ভূটান ও বাংলাদেশ। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বিএসএফ প্রধানত বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করে থাকে এবং যুদ্ধব্যতীত ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দেশের সীমান্তে হত্যাকাণ্ড প্রায় শূন্য।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন, ২০১০ এর ধারা ১১ (১) (ক) ও (থ) অনুযায়ী সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং সীমান্তে চোরাচালান, নারী-শিশু পাচার, মাদকদ্রব্য চোরাচালানসহ সকল আন্তরাষ্ট্রীয় অপরাধ প্রতিরোধের দায়িত্ব বিজিবির। কিন্তু সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বিজিবি বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ইস্যুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের সাংবিধানিক ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার’ এবং ‘জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা অধিকার রক্ষণ’ প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। অপরদিকে বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের যথাযথ বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সেক্ষেত্রে সীমান্তে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক কোনো অপরাধ করলে তার আইনগত অধিকার ও বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে নোটিশ গ্রহীতাদের সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, কোনো বিদেশি যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করলে তা ভারতের বৈদেশিক আইন ১৯৪৬ এর ১৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল ও কারাদণ্ড হতে পারে। এক্ষেত্রে কোনো বাংলাদেশি যদি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে, সেক্ষেত্রে ভারভীয় আইনে তার বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং কোনোভাবেই বিএসএফ বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করতে পারবে না।
এক্ষেত্রে বিএসএফ স্বয়ং তাদের ভারতীয় আইনের তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে। অপরদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি নাগরিকদের রক্ষায় যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তাই নোটিশ অনুসারে নোটিশ গ্রহীতাদের বাংলাদেশের সংবিধান রক্ষা ও সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের রক্ষায় অনুরোধ জানানা হয়েছে। অন্যথায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।