সিকৃবিতে কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতি, প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও

19
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। ছবি- মামুন হোসেন

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন তারা।
গত বছর ১৮ জুন প্রকাশিত ৯৩ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী পরিষদ কর্মচারীদের পর্যায়োন্নয়ন নীতিমালা অতিদ্রুত সংশোধন, অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের অতিসত্বর কার্ড ইস্যু করা, শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মচারীদের উচ্চতর পদে প্রমোশনের জন্য অতিসত্বর ইমিগ্রেশন কমিটি গঠন, হাউজ লোন দ্রুত বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা, কর্মচারীদের পোশাক ভাতা দ্রুত বাস্তবায়ন ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরিক্ষা চালু করলে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশাসন বরাবর দাবী জানান কর্মচারী পরিষদের নেতৃবৃন্দ। প্রশাসনের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি ও আন্দোলনে নামেন তারা। গত ৬ তারিখে কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মোঃ ছানারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম অন্যান্যদের নিয়ে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে পৃথক দাবী জানান। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীবৃন্দ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ন্যায্য আন্দোলনে ছাত্রলীগ সমর্থন জানাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা কেন শোষণের শিকার হবে এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন তুলেন তারা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ডাঃ শামীম মোল্লা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রার্থী হয়ে ভাইবা দিলেও সিন্ডিকেটে তার চাকুরী বাতিল হয়। অন্যদের চাকুরী হওয়া স্বত্তেও তার চাকুরী কেন বাতিল হয় এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে জবাব চান তারা। ২০২০ সালে মুজিববর্ষ সারা বাংলাদেশে উদযাপন করার পরিকল্পনা থাকলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের কোন কর্মসূচী না নিয়ে কেন নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ঐদিন ঠিক করা হলো এ বিষয়ে প্রক্টর সোহেল মিয়া ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মিঠু চৌধুরীর কাছে জানতে চেয়ে আশানুরূপ উত্তর পাননি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এজন্য প্রক্টর কার্যালয় ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দুইজনের পদত্যাগ দাবী করেন তারা। এ বিষয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মিঠু চৌধুরী, প্রক্টর সোহেল মিয়া, গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মাহফুজুর রহমান। এ সময় তারা প্রশাসনের অবস্থান ব্যাখা করে আন্দোলনরতদের শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। এ বিষয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোহেল মিয়া গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবকিছু অনুসরণ করে নিয়োগের প্রক্রিয়া আমরা এগিয়ে নিয়ে এসেছি। এবং সেটা অনুযায়ীই আগামীকাল লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্ররা যেসব দাবী নিয়ে এসেছে এ বিষয়ে তাদের সাথে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কথা বলা হয়েছে। আর কর্মচারীরা যেসব দাবী জানিয়েছে সেগুলো সময়োপযোগী নয় বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করে। বিজ্ঞপ্তি