নতুন নেতৃত্ব দক্ষতার প্রমাণ রাখবে

11

যেমনটি ধারণা করা হয়েছিল, তার ব্যতিক্রম খুব একটা ঘটেনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একবিংশতম জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে দলের প্রধান হিসেবে। আগামী তিন বছরের জন্য তিনিই নেতৃত্ব দেবেন দলকে। এটাও ঠিক যে দলে তাঁর কোনো বিকল্প এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। আগামী তিন বছরের জন্য সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আবারও ওবায়দুল কাদেরকেই দেওয়া হয়েছে। এবারের সম্মেলনের অনেক আগে থেকেই এই পদটি নিয়ে নানামুখী আলোচনা ছিল। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটেছে দ্বিতীয়বারের মতো তাঁর দায়িত্বে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগের চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদের মধ্যে দুটিতে নতুন নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের আট সাংগঠনিক সম্পাদক পদের মধ্যে পাঁচজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সম্পাদকমণ্ডলীর ১৪ সদস্যের নাম ঘোষণা করেছেন। যুক্ত হয়েছে দুই নতুন মুখ। সম্পাদকমণ্ডলীতে বিগত কমিটির ১০ নেতা একই পদে বহাল থাকছেন। কমিটির যে ৩৯টি পদে কোনো নেতার নাম ঘোষণা করা হয়নি সেগুলোর তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, অর্থবিষয়ক সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, উপদপ্তর সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী সংসদের ২৮ জন সদস্য।
দলের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ যেন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখতে পারে, জাতির পিতার স্বপ্নের দেশ গড়ার কাজ যেন এগিয়ে নিতে পারে, সে জন্য দলকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস অর্জনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। অন্যদিকে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব পেয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত শনিবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতিকে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন, তা পূরণের জন্য দলকে ‘স্মার্ট ও শক্তিশালী’ করে সাজাতে চান তিনি।
একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে স্বাভাবিকভাবেই জনসাধারণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। সেই জনপ্রত্যশা পূরণই নতুন কমিটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, তার পরের বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের বিপুল কর্মযজ্ঞ রয়েছে। এরপর রয়েছে ‘ভিশন ২০৪১’, ওই বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে চান শেখ হাসিনা। তারপর আছে শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান। দলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দূরদর্শিতা ও যোগ্যতাই সরকারকে এসব লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করবে। আমরা আশা করব, নতুন নেতৃত্ব নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রমাণ রাখবেন।