সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ চার বছর থেকে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক কফিল

10

স্টাফ রিপোর্টার :
সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার ওয়াজেদ আলী মজুমদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কফিল উদ্দিন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি এ প্রতিষ্ঠানে নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। দায়িত্ব পালনের কারণে এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়ে যান তিনি। একারণে তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির চক্ষুশুলে পরিণত হন কফিল উদ্দিন। তাকে পদচ্যুতি করার ছুঁতো খুঁজতেও থাকেন তিনি। আর সেই সুযোগ পেয়ে যান ২০১৫ সালের অক্টোবরে।
‘আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ’ এনে ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর তার কক্ষ তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে মাখন চন্দ্র নাথ নামে অপর শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। এরপর থেকে পদবঞ্চিত রয়েছেন কফিল উদ্দিন। পদ ফিরে পেতে তিনি ২০১৫ সালে আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করেন; দীর্ঘ চারবছর পর আদালত গত ০৯ অক্টোবর আমার পক্ষে- পদে বহাল রেখে বকেয়া বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদী প্রদানের নির্দেশও দেন। তবে আদেশ পেলেও তাকে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। প্রায় ৪ বছর থেকে বেতন ভাতার এক কানাকড়িও পাননি তিনি। এখন দায়িত্ব না পাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তার মাঝে মানবেতর দিন কাটাতে হচ্ছে তাকে।
রবিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কফিল উদ্দিন বলেন, ‘জকিগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজারের পাশে প্রতিষ্ঠিত ওয়াজেদ আলী মজুমদার মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিও ভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর দুপুরে নুর উদ্দিন আহমদ মজুমদার অসুস্থতার কথা বলে আমায় সিলেট স্কলারস হোমে নিয়ে যান । এসময় তাকে সুস্থ অবস্থায় দেখতে পাই। একই সাথে পরিচালনা কমিটির আরও কয়েকজন সদস্যকেও সেখানে পাই। তারা আমায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অব্যাহতি পত্র ও রেজুলেশনে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। কিন্তু অব্যাহতি প্রদানের পূর্বে আমায় আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগই দেয়নি। এরপর থেকেই স্কুলের সাথে সম্পর্কহীন অবস্থায় রয়েছি আমি। এ ঘটনার পর বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অফিস এবং শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি পরিচালনা কমিটি। পরে বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হই। হাই কোর্টে সিভিল রিভিশন মামলা- নং-২৬৫৪/২০১৭ দায়ের করলে হাইকোর্ট উক্ত মামলায় আমার পক্ষে রায় প্রদান করেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর সিলেট শিক্ষাবোর্ড থেকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে চিঠি প্রদান করাও হয়। এরপরেও তারা দায়িত্ব সমঝে দেয়নি।’
দীর্ঘ চার বছর থেকে বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করতে না পারায় আমি পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। তিনি তার ন্যায্য অধিকার ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মণিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।