মারামারি মামলায় ভাই-ভাতিজাসহ ৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড

20

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর ওসমানী মেডিকেল রোডের মধুশহীদ এলাকায় একটি মারামারির মামলায় ভাই-ভাতিজাসহ ৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে জরিমানাও করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- মৃত ইসমাইল মিয়ার পুত্র মানিক মিয়া (৫৫) তার পুত্র মো: মনিরুজ্জামন মিয়া (২৮), তার সহোদর সুজন মিয়া (২২), রাজন মিয়া (২৪), হোসেন মিয়া (২০), নগরীর বাগবাড়ী বিলপার ৪২ নং বাসার আব্দুল খালিকের পুত্র কয়ছর আহমদ (২৬), ও বাগেরহাট জেলার রায়েন্দা থানার হুগলবাতি গ্রামের মুসলিম মিয়ার পুত্র লাল মিয়া (৪০)। রায় ঘোষনার সময় সকল আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও মানিক মিয়া পলাতক ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বেলা ২ টার দিকে নগরীর মধুশহীদ এলাকায় জায়গা ও মামলা-মোকদ্দমার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে উক্ত আসামীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সঞ্জিত হয়ে একই এলাকার মুন্সিপাড়া ৩৫ নং বাসার সফিক মিয়া, তার ছেলে কামরুজ্জামান আহমদ মিঠুন, তার ভাই আরিফ আহমদ ও শরিফ আহমদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাথা, পেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে তাদেরকে গুরুতর আহত করে। তাদের আর্তচিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে আসলে আসামীরা অস্ত্র-শস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩টি রামদা, ১টি ডেগার, লোহার রড ও পাইপ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত সফিক মিয়ার স্ত্রী মোচ্ছা: মঞ্জিরা বেগম স্বপ্না বাদি হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৩০ (২০-০৯-২০১১)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৩১ মে কোতোয়ালী থানার এসআই মো: রায়হান আলী ৮ আসামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৩ সালের ৭ ফেব্র“য়ারী থেকে আদালত এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু করেন। এদিকে মামলা চলাকালিন সময়ে আসামীদের মধ্যে হাসান মিয়া (২৫) মৃত্যুবরণ করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী মানিক মিয়াকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৪ ধারায় ৩ বছর ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ড, মো: মনিরুজ্জামন মিয়াকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৬ ধারায় ৫ বছর ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ড, সুজন মিয়াকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৬ ধারায় ৩ বছর ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ড, রাজন মিয়াকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৬ ধারায় ৩ বছর ১ হাজার টাকা জরিমানা, হোসেন মিয়াকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৪ ধারায় ৩ বছর ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ও আসামী কয়ছর আহমদকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৪ ধারায় ৩ বছর ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩০৭ ধারায় ৫ বছর ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ড এবং লাল মিয়াকে ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাস, ৩৪১ ধারায় ১ মাস, ৩২৩ ধারায় ১ বছর, ৩০৭ ধারায় ৩ বছর ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট শামীম আহমদ, এডভোকেট মোহাম্মদ লালা ও আসামীপক্ষে এডভোকেট জয়শ্রী দেব জয়া মামলাটি পরিচালনা করেন।