বাকু ঘোষণার মধ্য দিয়ে ন্যাম শীর্ষ সম্মেলন শেষ

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাকু ঘোষণার মধ্য দিয়ে শনিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে নির্জোট সম্মেলন (ন্যাম) শেষ হয়েছে। শুক্রবার বাকু কংগ্রেস সেন্টারে ১২০ উন্নয়নশীল দেশের ফোরাম ন্যাম সম্মেলন উদ্বোধন করেন স্বাগতিক আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিঘাজ-ক্যানেল, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদ, জেবুতির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর, ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো আড্ডো, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলী, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী, ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরবাংগুলি বেরদিমহামেদো, বসনিয়া-হারজোগোভিনা প্রেসিডেন্সির চেয়ারম্যান বাকির ইজেত বেগোভিচ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এবং লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ মুস্তাফা আল সারাজ নির্জোট সম্মেলনে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বাকু কংগ্রেস সেন্টারের প্ল্যানারি হলে ১৮তম ন্যাম সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও সম্মেলনে যোগদানকারী অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দ এদিন বিকেলে অনুষ্ঠেয় দুদিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনেও যোগ দেন। অধিবেশন শেষে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ বাকু কংগ্রেস সেন্টারে অনুষ্ঠেয় অনুষ্ঠানে বাকু ঘোষণা দেন। খবর বাসস’র।
ওলীর সঙ্গে বৈঠক : প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের এক ফাঁকে বাকু কংগ্রেস সেন্টারে দ্বিপাক্ষিক বুথে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলীর সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন। ওলীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ও নেপালের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে দুই দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন। শহীদুল হক দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর আলাপে কানেক্টিভিটি, বন্দর ব্যবহার, ব্যবসা-বাণিজ্য কি করে বৃদ্ধি করা যায়, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান (বিবিআইএন) প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পিটিএ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পিটিএ ইস্যুটা অনেকদিন থেকে নেপালের কাছে আছে। এটি দ্রুত শেষ করে ফেললে দুই দেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে। বিবিআইএন কানেক্টিভিটি প্রসঙ্গে দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, যদি ভুটানের এখন অসুবিধা হয় তবে বাকি তিন দেশ মিলে এটা করে ফেলতে পারি। ওরাও (নেপাল) এতে রাজি আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমিও এটা রেইজ করেছি, তোমরা রেইজ করো। এটা আমরা করে ফেলি। আগামী মাসে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের নেপাল সফর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নেপাল সফরে যাবেন নবেম্বরের ১১-১৪ তারিখে। ওই সময় যেন কিছু আউটকাম (ফল) হয় সে বিষয়েও দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কথা হয়। বৈঠকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, দক্ষিণ-এশিয়ার যে স্থিতিশীলতা ও শান্তি সবাই মিলে সেটা বজায় রাখতে হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা আশা করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী, যেন স্থিতিশীলতা ও শান্তি অব্যাহত থাকে। পাশাপাশি, সন্ধ্যায় হোটেল হিলটনে শেখ হাসিনার সম্মানে আজারবাইজানে দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোঃ আল্লামা সিদ্দিকি আয়েজিত নৈশভোজেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
আজারবাইজানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আজারবাইজানের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী বিকেলে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে নির্মিত স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহিদুল হকসহ প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য সফর সঙ্গিরা এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে ১৮তম ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অবস্থান করছেন।