প্রশাসনের নেই সঠিক নজরদারী ॥ বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে কমছে না পেঁয়াজের বাজারে ঝাঝ

53

ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে মফস্বলের বাজার গুলোতে ইচ্ছে মত দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ। অধিক মূল্যের কারণে পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন দরিদ্র পরিবারের লোকজন। গতকাল রবিবার দুই উপজেলার বাজার গুলোতে সর্বনি¤œ ৭০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জানা যায়, সরকারের নানামুখি উদ্যোগের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজের দর সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে। কিন্তু সঠিক ভাবে বাজার মনিটরিং না হওয়ায় বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরের হাট-বাজার গুলোতে পেঁয়াজের দর এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসছে না। এতে সাধারণ লোকজন মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন। দরিদ্র লোকজন পেঁয়াজ কেনার কথা চিন্তাই করতে পারছেন না। ওসমানীনগর উপজেলার বড় বাজার গুলোতে পেঁয়াজের দর কিছুটা কমলেও ছোট ছোট বাজার গুলোতে এখনো ছড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গতকাল রবিবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বালাগঞ্জের সদর বাজার ৭০-৯০ মুরার বাজার ৭০-১০০ বেয়ালজুর বাজার৮০-৯০ ইলাশপুর বাজার ৭৫-১০০, মাদ্রাসা বাজার ৯০-১০০, কালিবাড়ি বাজার ৭৫-৯০ আজিজপুর বাজার ৮০-৯৫ ওসমানীনগর উপজেলার ময়না বাজারে ৯০-১০০, জামতলা বাজারে ৯০-৯৫, কলারাই, নিউ মার্কেট, বুরুঙ্গা, কালনীরচর ও শেরপুর নতুন বাজারে ৮০-৮৫ টাকা, উমরপুর, দয়ামীর, তাজপুর ও কুরুয়া বাজারে ৭০-৭৫ এবং উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজারে ৬৫-৭০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ মফস্বলের বাজার গুলোতে প্রশাসনিক মনিটরিং ব্যবস্থা বা নজর না থাকায় এমন অবস্থা চলছে। ওসমানীনগর উপজেলা প্রশাসন পেঁয়াজের দরি বৃদ্ধির খবর পেয়ে মাত্র একটি বাজারে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও মফস্বলের বাজার গুলোতে অভিযানের প্রয়োজনবোধ করেননি। ফলে সিলেটের অন্যান্য স্থানে পেঁয়াজের মূল্য হ্রাস পেলেও ওসমানীনগরের হাট-বাজারগুলোতে এর কোন প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে বালাগঞ্জ উপজেলা সদর বাজারে প্রশাসন কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করা হলেও উপজেলার অন্যকোন বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। ফলে বালাগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে একই অবস্থা বিরাজ করছে। সম্প্রতি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবর পেয়ে একরাতের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৮০-৯০ টাকা দর বাড়িয়ে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে ব্যবসায়ীরা। দর বৃদ্ধির আগে অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ গোদামজাত করেও রাখে। এর দু’দিন পর ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোয়ালাবাজারে কিছুক্ষণ অভিযান পরিচালনা করে পেঁয়াজের দর কমানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু এর কোন সুফল পায়নি ক্রেতা সাধারন। বালাগঞ্জ সদরের বাসিন্দা রিপন দাশ, পেঁয়াজের দাম কিছুতেই কমছে না। উপজেলা প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবকেত সুযোগ হিসাবে কাজে লাগচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এত ক্রেতা সাধারণকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। লামাতাজপুর গ্রামের হুমায়েল আহমদ বলেন, সরকার পেঁয়াজের দর কমানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকলেও ওসমানীনগরে এর প্রভাব পড়ছে না। উপজেলা প্রশাসনের সঠিক মনিটরিং না থাকায় এখনো ছড়া মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত রয়েছে।উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জুনায়েদ আহমদ বলেন, আমরা ওসমানীনগরের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা। উপজেলা প্রশাসনের নজরে এক দুইটি বাজার থাকে। মফস্বলের ছোট বাজার গুলোতে কখনো বাজার মনিটরিং করতে দেখা যায় না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: তাহমিনা আক্তার বলেন, কম দরে পেঁয়াজ বিক্রির জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব বলেন, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করার জন্য ইতিমধ্যে আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি । আবারও এব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।