হবিগঞ্জে গ্রেফতারের পর নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

10
নিহত ফারুক মিয়া।

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। অপরদিকে পুলিশ বলছে, দেয়াল টপকানোর সময় আহত হয়েছে ওই নির্মাণ শ্রমিক। আর চিকিৎক বলছেন, শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে না। এদিকে ওই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। মৃত ওই ব্যক্তি শহরের মোহনপুর এলাকার সঞ্জব আলীর ছেলে ফারুক মিয়া।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, হবিগঞ্জ শহরের মোহানপুর এলাকার ফারুক মিয়া একই এলাকার আব্দুল মান্নানের নিকট থেকে ৬/৭ মাস পূর্বে ১৫ হাজার টাকা সুদে নেয়। তখন সে ব্যাংকের দু’টি চেক দেয়। সুদ আসলসহ বর্তমানে উক্ত টাকা ৩৫ হাজারে দাঁড়ায়। সম্প্রতি সে আসল ১৫ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু তারপরও আব্দুল মান্নান সুদের টাকার জন্য উক্ত চেক দিয়ে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করে। মামলায় তার ৩ মাস করে ৬ মাসের সাজা হয়। এর প্রেক্ষিতে রবিবার দিবাগত রাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রাতেই তাকে আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে ছুটে যান পুলিশ সুপার, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রসহ এলাকার লোকজন।
নিহতের ছেলে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার মাসুক জানান, তার বাবার বিরুদ্ধে চেকের মামলা ছাড়া অন্য কোন মামলা নেই। রাতে পুলিশ তার বাবাকে সুস্থ অবস্থায় নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে তাকে নির্যাতন করলে তিনি মারা যান। তিনি বলেন, আমরা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
নিহতের ভাই নূরুজ্জামান জানান, রাতে পুলিশ তার ভাইকে আটক করে নিয়ে এসেছে। এরপর তাকে নির্যাতন করেছে। তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করি।
হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান মিজান জানান, আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে হচ্ছে আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিথুন রায় বলেন, আঘাতের নমুনায় বলছে আঘাতের কারণে মৃত্যু নাও হতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে না।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, ময়নাতদন্তে নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না।