বিশ্বনাথে যাত্রীবাহী বাস উল্টে আহত ৩৫

17
বিশ্বনাথ-রামপাশা-সিংগেরকাছ সড়কের দশদল (কাদিপুর) নামক স্থানে ধানক্ষেতে পড়ে উল্টে যাওয়া যাত্রীবাহী বাস।

জাহাঙ্গির আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
বিশ্বনাথে ফাতেমা পরিবহন নামের (সিলেট-জ-০৪-০২০৭) বাস ধানক্ষেতে পড়ে উল্টে গিয়ে নারী, শিশুসহ অন্তত ৩৫জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে বিশ্বনাথ-রামপাশা-সিংগেরকাছ সড়কের দশদল (কাদিপুর) নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত ৩০জনের মধ্যে গুরুতর আহত ১৫জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে এহিয়া আহমদ নামের ৩বছরের একটি শিশু, মকদ্দুছ আলী (৫০) এবং ইমামুল হক (৫২) নামের ওই তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানাগেছে। তবে, কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: তারেক নুরুল ইসলামকে টাকা না দেওয়ায় গুরুতর আহত রোগীদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্সে ওসমানী হাসপাতালে না পাঠানোর অভিযোগ জনপ্রতিনিধিসহ শতাধিক জনতার।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল আড়াইটার দিকে সিলেট থেকে যাত্রী নিয়ে বাসটির চালক বিশ্বনাথ হয়ে সিংগেরকাছ বাজার রওয়ানা দেয়। এ সময় বিশ্বনাথ-রামপাশা রোডের দশদল (কাদিপুর) নামক স্থানে গিয়ে একটি নাম্বারবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধানক্ষেতে পড়ে বাসটি উল্টে যায়। এতে বাসচালক, তার হেলপার ও অটোরিক্সা চালক এবং বাসযাত্রীসহ প্রায় ৩৫জন আহত হন। গুরুতর আহত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সিএনজি চালক রফিকুল ইসলাম (২২), বাসযাত্রী হুসাইন আহমদ (২০), আব্দুল কাদির (২৫), সাজুল মিয়া (২০), মনফর আলী (৩২), মনোয়ারা বেগম (৫২), আব্দুল কাহার (৩৫), ছবিয়া খাতুন (৩০), জুলহাস মিয়া (২৫), কল্যাণ দাশ (৫৪), মকবুল আলী (৩৬), রাসেল আহমদ (৩২), মাফিয়া বেগম (১৪), জাকির হোসেন (২৪)। তাদের প্রত্যেককে বিশ্বনাথ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্সে করে নয়, ওসমানীনগরের ফায়ার ব্রিগেডের এ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনায় আহতদের স্থানীয় কাদিপুরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান স্থানীয় জনতা। এসময় গুরুতর আহতদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে পাঠানোর অনুরোধ জানালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: তারেক নুরুল ইসলাম তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এ্যাম্বুলেন্স নিতে টাকা লাগে দাবি করলে ডাক্তার ও জনতার মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ডা: তারেক চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে চিকিৎসক ও আহত রোগীর স্বজন ও স্থানীয় জনতাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজর আলীসহ উপস্থিত শতাধিক লোকজন এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের ওসমানী হাসপাতালে পাঠাতে চাইলে ডা: তারেক নুরুল ইসলাম টাকা দাবি করেন। এনিয়ে উভয় পক্ষে হাতাহাতি হওয়ার পর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী ও এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় পুলিশের সহযোগিতায় ওসমানীনগরের তাজপুর ফায়ার ব্রিগেডের এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে আহত রোগীদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ প্রসঙ্গে ডা: তারেক নুরুল ইসলাম টাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন এ্যাম্বুলেন্স চালক অসুস্থ এবং ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। তবে, স্থানীয় জনতা ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে কোথাও চালকের সন্ধান পাননি।
হাতাহাতির বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে ওসি (তদন্ত) রামপ্রশাস বলেন, খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন, এবং রোগীদের ওসমানীতে পাঠান।