মুনির-তপন জুয়েল স্মরণ ॥ মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আলোর মিছিল

23
জুয়েল-তপন-মুনির স্মরণে জাসদ জেলা ও মহানগর শাখার আলোর মিছিল।

জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া প্রগতিশীর রাজনৈতিক কর্মী মুনির তপন জুয়েল স্মরণে নগরীতে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আলোর মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংস্কৃতিক মোর্চা এই আলোর মিছিলের আয়োজন করে।
মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮৮ সালে সিলেটে প্রকাশ্যে রাজপথে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী মুনির ই কিবরিয়া চৌধুরী, তপন জ্যোতি দে ও এনামুল হক জুয়েলকে হত্যার মাধ্যমে সিলেটে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী রাজনীতির উত্থান ঘটে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজো এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়নি। এই হত্যাকারীদের শাস্তি না হওয়ায়ই পরবর্তীতে সিলেটে একের পর এক খুনের রাজনীতি চালিয়ে যায় জামায়াত-শিবির।
বক্তারা পুনঃ তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকান্ডের পুণঃবিচার, প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। একইসঙ্গে জামায়াত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধেরও দাবি জানানো হয়।
আলোর মিছিলের শুরুতে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংস্কৃতিক মোর্চার আহ্বায়ক মিশফাক আহমদ মিশু এবং সেইসময়ের ছাত্রনেতা ও জাসদ নেতা এডভোকেট জাকির হোসেন। মিছিল শেষে উদ্যোক্তাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন দেবাশীষ দেবু।
আলোর মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন সাংবাদিক আল আজাদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এনামুল মুনির, নাগরিক মৈত্রীর আহ্বায়ক সমর বিজয় শী শেখর, জাসদ নেতা কিবরিয়া চৌধুরী ও গিয়াস আহমদ, বাসদ নেতা আবু জাফর ও প্রণবজ্যোতি পাল, গণসঙ্গীত শিল্পী অংশুমান দত্ত অঞ্জন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদর সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, কবি প্রণব কান্তি দে, সমাজকর্মী ফারমিস আক্তার, সাংবাদিক মইনউদ্দিন মঞ্জু, পরিবেশ কর্মী আশরাফুল কবির, নাট্যকর্মী ইন্দ্রানী সেন সম্পা, সুপ্রিয় দেব শান্ত, সংস্কৃতিকর্মী আয়েশা রুনা, গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের সংগঠক রাজীব রাসেল, সংস্কৃতিকর্মী রোমন আহমদ, চিত্রশিল্পী ইসমাইল গনি হিমন, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক নাবিল এইচ প্রমুখ।
এছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং মনির-ই কিবরিয়া ও তপন জ্যোতি দে’র পরিবারের সদস্যরা আলোর মিছিলে অংশ নেন।
এদিকে জামায়াত-শিবিরের হামলায় খুন হওয়া প্রগতিশীল ছাত্রনেতা মুনির-তপন-জুয়েল হত্যার পুনঃতদন্ত ও বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ জাসদ।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ জাসদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে মুনির-তপন-জুয়েলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সমাবেশে এই দাবি জানান বক্তারা ।
স্মরণ সমাবেশে বাংলাদেশ জাসদের জেলা সভাপতি এডভোকেট জাকির আহমদের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল হোসেনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সমন্বয়ক আবু জাফর, বাংলাদেশ জাসদ মহানগর সহসভাপতি ফেরদৌস আরবী, জেলা সহসভাপতি লালমোহন দেব, মহানগর সাধারণ সম্পাদক নাজাত কবির, জেলা সাধারন সম্পাদক এড.সাইফুল আলম, মহানগর সাংগঠনিক এড.এ.কে.এম শিহাব, সহ সসম্পাদক আব্দুল বাছির বাদল, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সদস্য ইন্দ্রানী সেন, বাসদ জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল, নাগরিক মৈত্রী সভাপতি সমর বিজয় সী শেখর, জাসদ জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ দের মধ্যে আর বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া, দেলোয়ার হোসেন, মোস্তফা উদ্দিন মান্না, জহির রায়হান, শৈলেন তালুকদার, তাজ উদ্দিন, বাবুল মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান টিপু, আব্দুল মান্নান স্বাধীন, বুলবুল আহমদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে জাকির আহমদ বলেন, ১৯৮৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও জাসদ ছাত্রলীগের তিন তুখোড় কর্মী মুনির ই কিবরিয়া, তপন জ্যোতি দেব এবং এনামুল হক জুয়েলকে মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যা করে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। ওই তিন হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে শহর সিলেটে আধিপত্য বিস্তার করে খুনের রাজনীতি শুরু করে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির চক্র।
তিনি বলেন, এই সময় প্রতিকুল পরিস্থিতির কারণে সুষ্ঠু বিচার পাওয়া যায়নি তাই মনির-তপন-জুয়েল হত্যার পুনঃতদন্ত ও বিচার দাবি সময়ের দাবি। বিজ্ঞপ্তি