প্রতারণার মামলায় জামিন পেলেন সাংবাদিক বুলবুল ॥ প্রতিবাদে বিক্ষোভ, জেলা পুলিশের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা ইমজা’র

14
জামিন লাভের পর সাংবাদিক বুলবুল।

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর মিরবক্সটুলা উইমেন্স হাসপাতালের সামন থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে জামিন পেলেন সাংবাদিক ও আইনজীবী মইনুল হক বুলবুল। গত শুক্রবার বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আবু উবায়দা তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত চত্বর থেকে আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা), সিলেটের সভাপতি বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বুলবুলকে গ্রেফতার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করে সিলেট জেলা পুলিশের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দেয় ইমজা।
গতকাল শুক্রবার সকালে কানাইঘাট থানা থেকে সিলেট আদালতে নিয়ে আসা হয় বুলবুলকে। তবে ছুটির দিন থাকায় আদালতে ছিলেন না কোনো বিচারক। পরে বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় শুনানি শেষে বুলবুলকে জামিন প্রদান করা হয়। বুলবুলকে সিলেট আনার খবর পেয়ে সকাল থেকেই সংবাদকর্মীরা আদালত চত্বরে ভিড় করেন। বিকেলে শুনানিকালেও বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর উইমেন্স হাসপাতালের সামন থেকে সাদা পোষাকে একদল অস্ত্রধারী ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, সিলেটের সাবেক সভাপতি ও এনটিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান নমইনুল হক বুলবুলকে তুলে নিয়ে যায়। এর ঘন্টাখানেক পর বুলবুলকে গ্রেফতার কথা স্বীকার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ। রায়হান আহমদ নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা প্রতারণা মামলায় বুলবুলকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে, সিলেট জেলা পুলিশের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে সিলেটে কর্মরত টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা)। গতকাল শুক্রবার সিলেট জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে তাক্ষণিক এক বিক্ষোভ কর্মসূচী থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সিলেটের সিনিয়র সাংবদিক মইনুল হক বুলবুলকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন।
এ সময় বুলবুলকে গ্রেফতার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেন ইমজা নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে মইনুল হক বুলবুলকে গ্রেফতারের পর সিলেটের পুলিশ সুপারের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে সিলেট জেলা পুলিশের সকল সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দেন ইমজা নেতারা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর একটি হাসপাতাল থেকে সাদা পোষাকে একদল পুলিশ ইমজা’র সাবেক সভাপতি ও এনটিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান মইনুল হক বুলবুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রথম অবস্থায় পুলিশ গ্রেফতারের বিষয়টি সাংবাদিক নেতাদের কাছে অস্বীকার করে। প্রায় দুই ঘন্টা পর পুলিশ বুলবুলকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
জামিনের পর বুলবুলের গ্রেফতার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আয়োজিত তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ সমাবেশে ইমজা সভাপতি বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী বলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের অধিকার রাখে। কিন্তু যেভাবে ফিল্মি কায়দায় বুবুলকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছে তা খুবই উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। কাউকে গ্রেফতারের সময় গ্রেফতারকারীর পরিচয় প্রদানের বিধান থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বুলবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে গ্রেফতারের মাধ্যমে পুলিশ একজন নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষিদের বিচার দাবি করছি।
ইমজা সভাপতি বলেন, বুলবুলকে গ্রেফতারের পর আমরা সিলেটের পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করি। কিন্তু তিনি আমাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারীর এ ধরণের আচরণ ঔদ্ধত্যের শামিল। তাই আমরা আজ থেকে এই ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সিলেট জেলা পুলিশের সংবাদ বর্জন করবো।
ইমজা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দেবু’র সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ইমজার সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান রিপন, আশরাফুল কবির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঞ্জু, আব্দুল আলিম শাহ, লিটন চৌধুরী, আনিস রহমান, সজল ছত্রী, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি দিগেন সিংহ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মুন্সি, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশকার ইবনে আমিন রাব্বি, সাংবাদিক ফারুক আহমদ, ফয়সল আলম, আকাশ চৌধুরী, এস সুটন সিংহ, শ্যামানন্দ শ্যামল, এস আলমগীর, গোলজার আহমদ, মারুফ আহমদ, নুরুল ওয়াহিদ, শিপার চৌধুরী, মাইদুল রাসেল, টুনু তালুকদার, শাহীন আহমদ, অনিল পাল, গোপাল বর্ধন, সেলিম হাসান, দিপক বৈদ্য, শামীম আহমদ, নওশাদ আহমদ চৌধুরী, মাধব কর্মকার, মিলন আহমদ, রুহিন আহমদ, রুবেল আহমদ প্রমুখ।