আফগানদের সাথে হেরেই গেল বাংলাদেশ

10

স্পোর্টস ডেস্ক :
চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ যে হেরে যাবে তা অনুমিতই ছিল। কিন্তুবৃষ্টি বাংলাদেশকে হারের হাত থেকে প্রায় বাঁচিয়ে দিয়েছিল। দিনের প্রথম দুই সেশন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। দিনের শেষ সেশনে যখন খেলা শুরু হয় তখন ড্র করতে হলে বাংলাদেশকে ১৮.৩ ওভার টিকে থাকতে হতো। কিন্তু হাতে চার উইকেট থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারল না।
দিনের খেলা আর চার ওভার বাকি থাকতে সাকিবরা অলআউট হয়ে গেল ১৭৩ রানে। আফগানিস্তান ম্যাচটি জিতে নিল ২২৪ রানে। প্রথম ইনিংসে ৫টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬টি (মোট ১১টি) উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন রশীদ খান।
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর তিন ম্যাচ খেলে দুইটিতে জিতল আফগানরা। অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দল হিসাবে টেস্টে এত কম ম্যাচ খেলে দুইটি জয় পেল আফগানিস্তান। এর আগে ভারতের কাছে হারের পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল এশিয়ার এই দলটি।
গতকাল আফগানিস্তানের দেয়া ৩৯৮ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ দিনের খেলা শেষ করেছিল। আজ বৃষ্টির কারণে দিনের প্রথম সেশনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। পরে বৃষ্টি থামলে দুপুর একটায় শুরু হয় খেলা। কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২ ওভার ১ বল খেলা হওয়ার পর আবার বৃষ্টি নামে। যার কারণে দ্বিতীয় সেশনও ভেসে যায়। পরে বিকাল চারটা ২০ মিনিটে শুরু হয় দিনের শেষ সেশনের খেলা। এই সেশনে ১৮.৩ ওভার টিকে থাকতে পারলে বাংলাদেশ ড্র করতে পারতো।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরে যান অন্যতম ভরসা সাকিব আল হাসান। জহির খানের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন তিনি। তার সংগ্রহ ৪৪ রান। এরপর মিরাজ নেমে কিছুটা আশা দেখাচ্ছিলেন। ২৮ বল খেলে ১২ রান করে রশীদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান তিনি।
এরপর তাইজুল নেমে ৬ বল খেলে কোনো রান করে রশীদের বলে এলবিডব্লিউ হন। রিভিউ থাকলে তাইজুল বেঁচে যেতে পারতেন। কিন্তু রিভিউ না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যান তিনি। শেষ উইকেট জুটিতে সৌম্যর সঙ্গি ছিলেন নাঈম হাসান। তারা প্রায় ড্রয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু দিনের খেলা যখন আর চার ওভার বাকি তখন রশীদের বলে ইব্রাহীম জাদরানের হাতে ক্যাচ হন সৌম্য।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গত বৃহস্পতিবার শুরু হয় বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রানে অলআউট হয়েছিল আফগানিস্তান। পরে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২০৫ রানে অলআউট হয়। প্রথম ইনিংস শেষে ১৩৭ রানে এগিয়ে ছিল আফগানরা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানিস্তান করে ২৬০ রান। আর বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৭৩ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ২২৪ রানে জয়ী আফগানিস্তান।
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩৪২ (১১৭ ওভার)
(ইব্রাহীম জাদরান ২১, ইহসানুল্লাহ ৯, রহমত শাহ ১০২, হাশমতউল্লাহ শহীদি ১৪, আসগার আফগান ৯২, মোহাম্মদ নবী ০, আফসার জাজাই ৪১, রশীদ খান ৫১, কায়েস আহমেদ ৯, ইয়ামিন আহমদজাই ০, জহির খান ০*; তাইজুল ইসলাম ৪/১১৬, সাকিব আল হাসান ২/৬৪, মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৭৩, নাঈম হাসান ২/৪৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১/৯, সৌম্য সরকার ০/২৬, মুমিনুল হক ০/৯, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/১)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২০৫ (৭০.৫ ওভার)
(সাদমান ইসলাম ০, সৌম্য সরকার ১৭, লিটন দাস ৩৩, মুমিনুল হক ৫২, সাকিব আল হাসান ১১, মুশফিকুর রহিম ০, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৪৮, মেহেদী হাসান মিরাজ ১১, তাইজুল ইসলাম ১৪, নাঈম হাসান ৭; ইয়ামিন আহমদজাই ১/২১, মোহাম্মদ নবী ৩/৫৬, জহির খান ০/৪৬, রশীদ খান ৫/৫৫, কায়েস আহমদ ১/২২)।
আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ২৩৭/৮* (৮৩.৪ ওভার)
(ইহসানুল্লাহ ৪, ইব্রাহীম জাদরান ৮৭, রহমত শাহ ০, হাশমতউল্লাহ শহীদি ১২, আসগার আফগান ৫০, আফসার জাজাই ৪৮*, মোহাম্মদ নবী ৮, রশীদ খান ২৪, কায়েস আহমেদ ১৪, ইয়ামিন আহমদজাই ৯, জহির খান ০; সাকিব আল হাসান ৩/৫৮, মেহেদী হাসান মিরাজ ২/৩৫, তাইজুল ইসলাম ২/৮৬, নাঈম হাসান ২/৬১, মুমিনুল হক ০/১৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/৩)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৭৩ (৬১.৪ ওভার)
(লিটন দাস ৯, সাদমান ইসলাম ৪১, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১২, মুশফিকুর রহিম ২৩, মুমিনুল হক ৩, সাকিব আল হাসান ৪৪, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭, সৌম্য সরকার ১৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ১২, তাইজুল ইসলাম ০, নাঈম হাসান ১*; ইয়ামিন আহমদজাই ০/১৪, মোহাম্মদ নবী ১/৩৯, রশীদ খান ৬/৪৯, জহির খান ৩/৫৯, কায়েস আহমেদ ০/৬)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: রশীদ খান (আফগানিস্তান)