রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত দেয়া হোক

11

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ভয়ংকর সব খেলা চলছে। দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়রা এরই মধ্যে মুখোশ খুলতে শুরু করেছে। কক্সবাজারে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার সমাবেশ তেমনই ইঙ্গিত দেয়। এই সমাবেশের পেছনে কাজ করেছে মূলত দুটি সংগঠন। একটি হচ্ছে জামায়াতের আদলে গড়া রোহিঙ্গা সংগঠন এআরএসপিএইচ (আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস)। এর ৫২ সদস্যের মজলিসে শুরার সবাই বেতনভোগী। অন্যটি হচ্ছে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন আল খিদমাত ফাউন্ডেশন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, এদের মাধ্যমে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই সমাবেশের সব খরচ জুগিয়েছে। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরেই গোপনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে কাজ করে চলেছে। এদের সঙ্গে স্থানীয় জামায়াত নেতাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। গোপনে কাজ করে পাকিস্তানভিত্তিক মারকাজুলসহ আরো কিছু সংগঠন। আরেকটি এনজিওর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ধারালো অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। ছয় হাজার অস্ত্র জব্দও করা হয়েছে। প্রশাসন ও রোহিঙ্গা শিবিরসংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার তৎপরতা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছে। অভিযোগ রয়েছে, স্বার্থান্বেষী বিদেশি সংগঠনের কাছ থেকে তারা প্রচুর অর্থ পাচ্ছে। ফলে এই রোহিঙ্গা সংকট আমাদের কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে এবং এর ফলে কত মূল্য চুকাতে হবে, তা নিয়েও ব্যাপক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির এবং শিবিরের আশপাশের এলাকায়ও বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। জানা যায়, যেদিন রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবাসন উদ্যোগও ব্যর্থ হয় এবং রোহিঙ্গারা ব্যাপক আনন্দ-উল্লাস করে, সেদিনই রোহিঙ্গা ডাকাত নূর মোহাম্মদের মেয়ের কান ফোঁড়ানো উপলক্ষে দিনে-রাতে বিরাট ভোজের আয়োজন করা হয়। এতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও ইয়াবা কারবারিরা যোগ দেয়। অনুষ্ঠানে এক কেজি সোনা ও ৪০ লাখ টাকা উপঢৌকন পায় নূর মোহাম্মদের মেয়ে। জানা যায়, ১৯৯২ সালে আসা নূর মোহাম্মদ এরই মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েছেন এবং শিবিরসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় তাঁর চারটি বাড়ি ও নামে-বেনামে অনেক জমি রয়েছে। জানা গেছে, পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু এত দিন তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ অনেক মামলা থাকলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এই নতুন-পুরনো রোহিঙ্গারা মিলে কক্সবাজারকে নিয়ে নানা ধরনের অশুভ পরিকল্পনা করছে। জানা যায়, স্থানীয় লোকজনের বাড়িঘর, জমিজমা কেড়ে নিতে এবং তাদের কক্সবাজার থেকে তাড়িয়ে দিতে হত্যা-নির্যাতনসহ নানা কৌশল প্রয়োগের প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে এমন অনেক আলামত চোখেও পড়েছে। তারা স্থানীয় অনেককে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছে। আরো ভয়ংকর হচ্ছে তাদের পেছনে থাকা বিদেশি শক্তির অশুভ চক্রান্ত। তাদের হয়ে এনজিওগুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অস্ত্র-অর্থ দিচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে। এমনকি কিছু রোহিঙ্গাকে ভাসানচর বা অন্যত্র স্থানান্তরের সরকারি উদ্যোগেও বাধা দিচ্ছে। তাহলে তারা সব রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে রেখে কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়?
আমরা চাই, রোহিঙ্গারা দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যাক। এর আগে কিছু রোহিঙ্গাকে অন্যত্র স্থানান্তর করে কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের রক্ষা করা হোক। সব অশুভ চক্রান্তের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হোক।