কাশ্মীর সংহতি পরিষদের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ॥ কাশ্মীরে মুসলমানদের উপর ভারতের অমানবিকতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে

95
কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট জেলা ও মহানগর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

কাশ্মীরের নিরপরাধ মুসলমানদের উপর ভারত সরকারের অমাবিকতা ও নৃশংসতা দিন বেড়ে চলেছে। কাশ্মীরের নাগরিকদের ন্যায্য অধিকার হরণ করে দেশব্যাপী ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কাশ্মীরীদের উপর নির্যাতনের ষ্টীম রোলার চালানো হচ্ছে। মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরকে যেখানে স্বাধীনতা দেয়ার কথা। এর পরিবর্তে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের বিদ্যমান স্বায়ত্ত্বশাসন টুকুও কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত অমানবিক এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় কাশ্মীর নিয়ে ভারত যে জঘন্য খেলা শুরু করেছে তা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সহ বিশ্ব মুসলিমকে গর্জে উঠতে হবে।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা কাশ্মীরে ভারত সরকারের চলমান আগ্রাসনের প্রতিবাদে নগরীতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে কাশ্মীর সংহতি পরিষদ সিলেট। মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। বিভিন্ন শ্রেণীপেশার সহগ্রাধিক

কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসন, মুসলমানদের উপর হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে কাশ্মীর সংহতি পরিষদ সিলেটের উদ্যোগে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

জনতার উপস্থিতিতে মিছিলটি বন্দরবাজার থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়।
বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন পরিষদের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল হাফিজ মাওলানা আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে, হাফিজ মাওলানা মিফতাহুদ্দীন ও মাওলানা মাহমুদুর রহমান দিলোয়ারের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ড. মাওলানা এএইচএম সুলাইমান, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মুকিত, মাওলানা মকছুছুল করিম চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল বাসিত, ইফতেখার আহমদ, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা মুহিবুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, মোঃ আব্দুল গফুর, এখলাছুর রহমান, সুলতান আহমদ, মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, মাওলানা মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা নাছির উদ্দিন ও মাওলানা আব্দুল হালিম প্রমুখ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য প্রফেসর ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেছেন, কাশ্মীরের মুসলিম রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার, গৃহবন্দি, বাড়তি লাখো সৈন্য মোতায়েনের মাধ্যমে মারাত্মক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে জাহেলী যুগের মতো মুসলমানদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্ব মুসলিম নেতাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কাশ্মীর সঙ্কট শুধু কাশ্মীরেরই নয়, এ সঙ্কট বাংলাদেশেরও। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিবাদ মুখর হতে হবে। কাশ্মীরিদের মুসলমানদের উপর নির্যাতন ভারতের গণতন্ত্রকে গলা কাটার শামিল এবং এতে করে ভারতই টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।
গতকাল শুক্রবার (৯ আগষ্ট) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগরীর উদ্যোগে ভারতের বিজেপি সরকার কর্তৃক সংবিধান পরিবর্তন এবং কাশ্মীরে আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
বাদ জুম্মা মিছিলটি সিলেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সম্মুখ থেকে শুরু করে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌহাট্টায় গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব নজির আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা সহ সভাপতি মাওলানা রেদওয়ানুল হক চৌধুরী রাজু, মহানগর সাবেক সভাপতি মুফতি মো. ফখরুদ্দিন, মহানগর সহ-সভাপতি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, জেলা সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিন, ইশা ছাত্র আন্দোলন সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ, জেলা সভাপতি ফয়জুল হাসান চৌধুরী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল হক, ইশা ছাত্র আন্দোলন মহানগর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আরাফাত, ইসলামী যুব আন্দোলন জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী রাকিব, জেলা প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা ইমরান আহমদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাফিজ নোমান আহমদ ফাহাদ, কোতোয়ালী থানা সভাপতি মো. আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ।
সিলেটে হিউম্যানিটি মুভমেন্ট : কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে হিউম্যানিটি মুভমেন্ট অব বাংলাদেশের উদ্যোগে শুক্রবার (৯ আগষ্ট) বাদ জুম্মা বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
হিউম্যানিটি মুভমেন্ট অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ মুসাদ্দিক আহমদের সভাপতিত্বে, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আল হাদী ও সেক্রেটারী খলিলুল্লাহ মাহবুবের যৌথ পরিচালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন- জামেয়া দারুল কোরআন সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামেয়া দারুল উলুম সিলেটের প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী।

কাশ্মীরে মুসলিম গণহত্যা বন্ধ ও ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে নগরীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগরীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার সাংবিধাদের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরীদের অধিকার হরন করেছে। রাজ্য প্রধানদের গ্রেফতার করে পর্যটকদের সরিয়ে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে তাঁরা ক্লান্ত হয়নি। ১৪৪ ধারা জারী করে ইন্টারনেট পর্যন্ত বন্ধ করেছে। তাই কাশ্মীরের অসহায় মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো সকল মুসলমানদের নৈতিক দায়িত্ব।
অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন- হিউম্যানিটি মুভমেন্ট অব বাংলাদেশের উপদেষ্টা আহমেদুর রহমান খান হিনু, মাদানী কাফেলা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, জামেয়া নাজাতুল উম্মাহর মুহতামিম মাওলানা তোফায়েল আহমদ উসমানী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাওলানা সদরুল আমিন, জামেয়া দারুল উলুম সিলেটের শিক্ষা সচিব মাওলানা এম বেলাল আহমদ চৌধুরী, মাওলানা এরশাদ খান আল হাবিব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাফিজ সাব্বির আহমদ রাজি, হাফিজ কবির আহমদ, হাফিজ শাহিদ হাতিমী, কায়ছার মাহমুদ আকবরী, জাফর ইকবাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মুহাফিজুল ইসলাম সাকিব, সাজ্জাদ হোসেন রুমন, সালমান আহমদ, তাজুল ইসলাম, তামিম আহমদ, মারুফ আহমদ, শাহ আলম, ইউসুফ আল আজাদ, রিয়াজ উদ্দিন, নাইম আহমদ প্রমুখ।
আল ইসলাহ-তালামীয : ভারত সরকার কর্তৃক জম্মু-কাশ্মীরে মুসলমানদের অধিকার খর্ব, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট, নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে।
গতকাল ৯ আগষ্ট শুক্রবার বাদ জুম্মা মিছিলটি নগরীর সোবহানীঘাটস্থ হাজী নওয়াব আলী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজ কাশ্মিরের মুসলমানেরা ভারত সরকার কর্তৃক নির্যাতিত। কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর আঘাত করে গোটা বিশ্বের মুসলমানদের আঘাত দেয়া হয়েছে। আজকে কাশ্মীরের জনগণের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে, অথচ তাদেরকে আগ্রাসী সরকার ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সাথে উপহাস করছে। তিনি কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, তাদের কী দোষ ছিল যে, তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হল, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, ইন্টারনেটসহ সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করা হল। এ অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে তাদের অন্ন-বস্ত্রের সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এ পরিস্থিতির দ্রুত নিরসন চাই। তিনি জাতিসংঘকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তারা আজ এ বিষয়ে বুবার ভূমিকা পালন করছে, এক্ষেত্রে ওআইসিকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি। তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সাহসী অবস্থান ও রোহিঙ্গাদের পক্ষে মানবতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে সরকার বিশ্ব মহলে যে সুনাম অর্জন করেছে আমরা কাশ্মীর ইস্যুতেও সরকারের সেরকম ভূমিকা দেখতে চাই। তিনি কাশ্মিরের উপর সকল অমানবিকতা বন্ধ করতে ভারতেরকে চাপ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারে প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, কাশ্মীরের পক্ষে অবস্থান নিলে এদেশের ষোল কোটি মুসলমান আপনাদের পাশে থাকবে।
আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান এর সভাপতিত্বে ও সিলেট মহানগর আল ইসলাহর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা এবং সিলেট পশ্চিম জেলা তালামীযের সভাপতি শেখ আলী হায়দারের যৌথ পরিচালনায় মিছিল পরবর্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আনজুমানে আল ইসলাহর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মঈনূল ইসলাম পারভেজ, তলামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূনূর রহমান লেখন। বিজ্ঞপ্তি