নবীগঞ্জে প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় স্কুল ছাত্রীকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত, আটক ২

13

ছনি চৌধুরী হবিগঞ্জ থেকে :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের সমরগাঁও এলাকায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রেমের ডাকে সাড়া না দেয়ায় ইয়াছমিন আক্তার(১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রীকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে দুই বখাটে। আশংকাজনক অবস্থায় স্কুল ছাত্রী ইয়াছমিন আক্তার(১৫)কে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক দুই বখাটেকে আটক করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলো নোয়াগাঁও গ্রামের আফাজ উদ্দিনের পুত্র আব্দুর রহিম (২৫) ও সেকুল মিয়া (২০)। যদিও পুলিশ বলছে এ ঘটনা শুধুই মারামারি অন্য কিছু নয়।
আহত স্কুল ছাত্রী কুর্শি ইউনিয়নের সমরগাঁও (নোয়াগাঁও) গ্রামের সুজন মিয়ার মেয়ে ও সৈয়দ আজিজ হাবিব উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের আফাজ উদ্দিনের পুত্র আব্দুর রহিম বিভিন্ন সময় রাস্তাঘাটে ইয়াছমিন আক্তারকে বিরক্ত করতো এবং একাধিকবার প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ইয়াছমিন তার প্রস্তাবে সাঁড়া দেয়নি। এরই জের ধওে গত শনিবার (২০ জুলাই) বিকেলে স্কুল ছুটি হওয়ার পর ইয়াছমিন আক্তার (১৫) বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির নিকটবর্তী কবরস্থানের রাস্তার পাশে পৌঁছার পর আব্দুর রহিম ইয়াছমিনের গতিরোধ করে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে অশ্লীল কথা বার্তা বলে এর প্রতিবাদ করে ইয়াছমিন। এ সময় আব্দুর রহিম ও সেকুল মিয়া ইয়াছমিনকে রাস্তার পাশে ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ সময় ইয়াছমিনের আর্ত-চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।
পরে ইয়াছমিনকে তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এদিকে এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্কুল ছাত্রীর উপর হামলার ঘটনায় রাতে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষকবৃন্দ, স্থানীয় বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তির বর্গের উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠক করা হয়। পরে বৈঠকে বসা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পুলিশকে খবর দিলে রাত ১০টায় নবীগঞ্জ থানার এস আই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহিম ও সেকুল মিয়াকে বাংলা বাজার থেকে আটক করে।
এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রী ইয়াছমিন আক্তারের মা তাছলিমা বেগম বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে আহত মেয়ের চাচা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমার ভাতিজি ইয়াছমিনকে আব্দুর রহিম এর আগেও বেশ কয়েকবার রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ভাবে বিরক্ত করে আসছে। ইয়াছমিকে দেখলে আব্দুর রহিম নানা ধরণের অশ্লীল কথাবার্তা বলে। এর জের ধরে আমার ভাতিজিকে আজকে স্কুল থেকে ফেরার পথে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
সৈয়দ আজিজ হাবিব উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবুল কালাম মিটু বলেন, আমাদের স্কুলের এক ছাত্রীকে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করেছে বখাটেরা আমরা জড়িতদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করণে প্রশাসনের সহযোগীতা চাই।
এদিকে এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, তাদের দুই পরিবারের মারামারিতে মেয়েটি আহত হয়। আমরা তাৎক্ষণিক দুজনকে আটক করি। এর বাহিরে আমার কিছু জানা নেই।