সুনামগঞ্জে শহরে চলছে মৎস্য সপ্তাহ হাওরে চলছে মৎস্য নিধন !

14

একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে  :
সুনামগঞ্জ জেলা ও উপজেলা সদরে ঘটা করে চলছে সৎস্য সপ্তাহ অপরদিকে প্রজনন মৌসুমে হাওর, নদী-নালা, খালবিলে অবাধে নিষিদ্ধ কোনা ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছের পোনা নিধন চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাওরপারের মৎস্যজীবীরা স্থানীয় মৎস্য অফিসকে ম্যানেজ করে অবাধে পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন। জেলা সদর সহ উপজেলা সদরের প্রত্যেক বাজারে মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে নিয়মিত কিন্তু এ যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় মৎস্য কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, মাছের বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা দেশে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হাওর, নদী-নালা, খালবিলে নয় ইঞ্চির নিচে রুই, কাতলা, কালবাউশ, মৃগেল, কালিয়াসহ রুই জাতীয় মাছের পোনাসহ মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। কিন্তু জেলেদের বিকল্প জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলার মৎস্যজীবীরা হাওরগুলো থেকে অবাধে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন।
জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানাযায়, কোনা জাল নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে জেলার হাওরগুলোতে কোনা জালের ব্যবহার বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের হাওরে নিষিদ্ধ কোনা জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চলছে। এতে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে দেশি মাছের প্রাচুর্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে পোনা মাছ শিকার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে দিনরাতে নিষিদ্ধ কোনা জাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরছে হাওরপারের মানুষ। তাদের অনেকেই মৌসুমি মৎস্যজীবী। বর্ষার ছয় মাস তারা হাওরে মাছ ধরে। কোনা জালের ছিদ্র মশারির ছিদ্রের চেয়ে ছোট হওয়ায় মাছের একেবারে ছোট পোনাটিও উঠে আসে। অনেক সময় ডিমও আটকা পড়ে যায়। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার হিসাবে, হাওরের ৫৫ প্রজাতির মাছ বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে মহাশোল, রিটা, নানিদ, বাঘাইড়সহ পাঁচ প্রজাতির মাছ অতি সংকটাপন্ন এবং আরও ১৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে সংকটনাপন্ন অবস্থায়। যত দ্রুত সম্ভব কোনাজাল, কারেন্ট জাল ব্যবহার বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান- নিষিদ্ধ কোনা জাল ও দড়া জাল নিয়ে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত আবার ভোর থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত পালাকরে চলে পোনা মাছ শিকার। একেকটি কোনা জালের সাথে ৬-৮ জন লোক ও দড়াজালে ৪ জন করে দল গঠন করে হাওরে হাওরে পোনা মাছ শিকারে নামতে দেখা যায়। প্রতিটি কোনাজাল দিয়ে কমপক্ষে ২ থেকে ৩মন মাছ শিকার করা হচ্ছে। এ হিসেবে প্রতিদিন জেলার বৃহৎ হাওর গুলো থেকে কয়েক টন মাছ শিকার করা হচ্ছে। এবং তা গ্রামে ও স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। হাওরপাড়ের সচেতন লোকজন বলছেন, অন্তত পক্ষে জৈষ্ঠ্য, আষাঢ় ও শ্রাবণ এই তিন মাস মাছের পোনা শিকার বন্ধ করা গেলে মৎস্য সম্পদে ভরপুর হয়ে যেতো হাওরাঞ্চল, লাঘব হত সকল অভাব অনটন।
মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, অবাধে মাছ ধরা বন্ধে মোবাইল কোর্ট, জরিমানাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।