বিশ্বনাথে পিতার প্রতারণা ॥ প্রথম স্বামীদের অগোচরে লন্ডনী দুই মেয়েকে দ্বিতীয় বার বিয়ে

274

স্টাফ রিপোর্টার :
বিশ্বনাথ উপজেলার পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামে অর্থের লোভে এক পিতা তার দু’মেয়েকে ২বার বিয়ে দিয়ে বর্তমানে প্রতারক পিতা আব্দুল মন্নান (৬৬) সিলেটের কারাগারে রয়েছেন। তিনি পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের মৃত মরম আলীর পুত্র।
গত ২৩ জুন লন্ডন থেকে আব্দুল মন্নান দেশে ফিরে পরদিন ২৪ জুন সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর আগে আব্দুল মন্নানের ভাই আব্দুল মনাফের দায়েরকৃত বিশ্বনাথ সিআর ২৩/২০১৭ নং মামলায় একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর ওই আদালত আসামী আব্দুল মন্নানকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদন্ড দেন। বর্তমানে আব্দুল মন্নান সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে এ মামলার সাজাভোগ করছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলার পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের মৃত মরম আলীর ১ম ছেলে আব্দুল মন্নান ও তার স্ত্রী নেওয়ারুন নেছা খানম তার ২ ছেলে ও ৫ মেয়েকে নিয়ে স্থায়ীভাবে লন্ডনে বসবাস করে আসছিলেন। এই সুবাদে তিনি দেশে এসে এক মেয়ে রুমি বেগমকে তার আপন ছোট ভাইয়ের ছেলে শাহজাহান আহমদের কাছে এবং অপর মেয়ে সীমা বেগমকে আপন ছোট বোনের ছেলে মাছুম আহমদের নিকট ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর আব্দুল মন্নান তার স্ত্রী ও মেয়েদেরকে নিয়ে লন্ডনে চলে যান। কিছুদিন যাওয়ার পর আব্দুল মন্নান ও তার মেয়েরা স্বামীদের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেন। পরে তারা জানতে পারেন লন্ডনে আব্দুল মন্নান প্রতারণার মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে তার দুই পূর্বের স্বামীদের তালাক না দিয়ে মেয়েকে অন্য দুই ছেলের কাছে বিয়ে দিয়ে দেন। এর পর শাহজাহান আহমদের পিতা আব্দুল মনাফ বাদি হয়ে আব্দুল মন্নান, তার স্ত্রী নেওয়ারুন নেছা ও মেয়ে মোচ্ছ: রুমি বেগমকে আসামী করে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারী সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। যার নং-বিশ্বনাথ সিআর ২৩/২০১৭। পরে এ মামলাটি সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে স্থানান্তরিত হয়। উক্ত আদালত একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাদীসহ মোট ৫ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামী আব্দুল মন্নানকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদন্ড এবং অপর আসামী নেওয়ারুন নেছা ও তার মেয়ে মোচ্ছা: রুমি বেগমকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। এ মামলায় বর্তমানে জেল কাটছেন প্রতারক আব্দুল মন্নান।
এদিকে, বিশ্বনাথ থানার কারিকোনা গ্রামের রইছ আলীর ছেলে মাছুম আহমদ প্রতারক শ্বশুড় আব্দুল মন্নান গংদের বিরুদ্ধে আরেকটি প্রতারনা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।