পাকিস্তানের খেলার সময় হেডিংলির আকাশে এ কোন বার্তা!

16

ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট
বিশ্বকাপের আসরে হেডিংলিতে তখন পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচ চলছে। এ সময় হেডিংলির আকাশ দিয়ে উড়ে যেতে থাকলো একটি প্লেন। খানিকটা পেছনে সুতোয় বাঁধা বড়সড় ব্যানারে উড়ছিল একটি লেখা- ‘হেল্প এন্ড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস ইন পাকিস্তান’ (পাকিস্তানে গুম বন্ধ করতে সাহায্য করুন)। সবার চোখে পড়লো এই লেখা। আসলে কী বোঝানো হলো এই বার্তায়?
প্লেনটি উড়ে যাওয়ার সেই মুহূর্তের ভিডিও এবং ছবিই এখন ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে। আর তাতে খোঁজা হচ্ছে এই বার্তার অর্থ। যদিও অনেকে বলছেন, পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে লোকজন গুম হওয়ার বিরুদ্ধে জনমত গড়তে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে।
হেডিংলিতে অবস্থানরত পাকিস্তানের প্রখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক সাজ সাদিক তার টুইটার অ্যাকাউন্টে সেই মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে লিখেন, ‘এই মেসেজ নিয়ে হেডিংলির আকাশ দিয়ে উড়ে গেলো একটি প্লেন।’
ছবিটি যে ভূয়া বা গুজব নয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘মাঠ থেকে আমার এক বন্ধু ছবিটি তুলেছে এবং এটি মিথ্যা নয়।’
সাজ সাদিকের ওই পোস্টে ফিয়াজ বালুচ নামে একজন যুক্ত করেছেন উড়োজাহাজটি উড়ে যাবার ভিডিও। তিনি লিখেছেন, ‘যারা বলছেন এটি মিথ্যা, তারা এই ভিডিওটি দেখুন। এটি সম্ভবত পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হাতে বেলুচিস্তানে জোরপূর্বক গুমের মতো বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে।’
এছাড়া ওই পোস্টে অনেকেই ‘ফ্রি বেলুচিস্তান’ লিখে মতামতও জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বেলুচিস্তান খুব শিগগির পাকিস্তান থেকে ‘মুক্ত’ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে এই প্লেন কোন এয়ারলাইন্সের বা কোথা থেকে উড়েছে এবং কোথায় নেমেছে, কারা এই প্লেন উড়িয়েছে, তা জানা যায়নি।
এর আগে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের দিন বার্মিংহামের প্রধান সড়কগুলোর বিলবোর্ডেও একই ধরনের স্লোগান দেখা যায়।
স্বাধীনতাকামী বেলুচিস্তানের লোকজনই তাদের পক্ষে জনমত গড়তে এ প্রচারণা চালিয়ে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৪৭-১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হয়ে যায় বেলুচিস্তান। কিন্তু একীভূত হওয়ার পর থেকেই বেলুচিস্তানের নেতৃত্ব অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক নিপীড়নের অভিযোগ করে আসছে কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে। সেজন্য সেখানে দশকের পর দশক ধরে চলছে স্বাধীনতাকামী আন্দোলন।
এই আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নতাবাদ হিসেবে আখ্যা দিয়ে পাকিস্তান সরকার সেখানে সামরিক বাহিনীর অবস্থান বাড়িয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, বেলুচিস্তানে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর আচরণ মানবাধিকার লঙ্ঘিত করছে।