কুলাউড়ায় আতঙ্ক নিয়ে চলছে ট্রেন, ফের দুর্ঘটনার আশঙ্কা

12

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গত তিন দিনের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের পানি নিচের দিকে নামছে। উপজেলার বরমচালের বড়ছড়া দিয়ে অতিরিক্ত পানির গ্রোত প্রবাহিত হয়ে নামছে হাকালুকিতে। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গত রবিবার দুর্ঘটনাকবলিত উপবন ট্রেনের শেষ বগিটি।
সেতুর নিচে ছিটকে পড়া বগিটা সেখান থেকে অপসারণ না করায় ছড়ার পানি যেতে বাধা পাচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা পানির গ্রোত এসে এই বগিতে ধাক্কা খেয়ে সেতুর দুই পাশের মাটিতে আঘাত দিচ্ছে। সেতুর নিচ থেকে মাটি ধসে পড়ে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, বরমচালে দুর্ঘটনাকবলিত আলোচিত বড়ছড়া সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বরমচাল স্টেশন থেকে এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট পর ছেড়ে গেছে ট্রেন। শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুর ১টা ১০ মিনিটে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা ট্রেনটি দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে বরমচাল স্টেশনে আটকা পড়ে। এতে বিপাকে পড়েন ট্রেনের কয়েক শ যাত্রী।
বিষয়টি মাস্টার শফিকুল ইসলাম ঢাকা কন্ট্রোল রুমকে জানিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে পিআইডাব্লিউ না বলা অবধি ট্রেন ছাড়া যাবে না। পরে পিআইডাব্লিউ’র কর্মকর্তারা এসে সেতুর অবস্থা দেখে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার নির্দেশ দেন।
রেল লাইনের পাশে এখনও এভাবে পড়ে আছে বগিটি।
টানা বৃষ্টির ফলে পানির প্রবল গ্রোতে বড়ছড়া সেতুর নিচ থেকে মাটি সরে গেছে এমন ধারণা বরমচাল স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলামের।
কুলাউড়ায় কর্তব্যরত সহকারী স্টেশন মাস্টার মাজহারুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছু স্থানে রেল লাইনের ওপর পানি উঠে গেছে। তাছাড়া বড়ছড়া ব্রিজের টেকসইয়ে সন্দেহ হচ্ছে। হতে পারে প্রবল গ্রোতে নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। তাই ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগর এলাকায় রেললাইনে পানি উঠেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় বড়ছড়া সেতুর ওপর রেলপথ দিয়ে ট্রেন চললে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বরমচাল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান বলেন, দুর্ঘটনকবলিত বড়ছড়া সেতুর নিচে উপবন ট্রেনের বগিটি এখনো উদ্ধার না করার কারণে পাহাড়ি ঢলের পানি যেতে সমস্যা হচ্ছে। সেতুর উভয়পাশের মাটি ধসে পড়ছে। পুরাতন পিলারের বিভিন্ন অংশও ঝুঁকিতে রয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে ট্রেনের বগিটি উদ্ধার করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ও রেললাইন মেরামত করতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তা না হলে ফের বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পূর্ত) জুলহাস-এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
গত ২৩ জুন রাত ১১টা ৫০ মিনিটে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়ার বরমচাল ইসলামাবাদ এলাকার বড়ছড়া সেতুর ওপর লাইনচ্যুত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। আহত হন শতাধিক।