বিশ্বনাথে ডাকাত দলের সাথে বন্দুক যুদ্ধে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ গুলিবিদ্ধ ৬, অস্ত্রসহ এক ডাকাত গ্রেফতার

49
বিশ্বনাথে ডাকাত দলের সাথে গুলি বিনিময়কালে আহত পুলিশ (১) আহত ডাকাত (২) উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র সহ ডাকাতদের ব্যবহৃত অস্ত্র (৩)।

জাহাঙ্গির আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
বিশ্বনাথের কুড়িখলা ব্রীজে গতকাল বুধবার ভোররাতে ডাকাত ও বিশ্বনাথ থানা পুলিশের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ১৫ মিনিটের বন্দুক যুদ্ধে উভয় পক্ষে ২৪ থেকে ২৫ রাউন্ড গুলি বিনিময়কালে ৩ দারোগাসহ ৫ পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহাত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় অস্ত্রসহ এক ডাকাতকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ৫ পুলিশ সদস্যসহ ওই ৬জন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন, থানা পুলিশের এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা, এএসআই পরিমল চন্দ্রশীল, এএসআই জামাল খান, কনস্টেবল আব্দুল হক ও আবুল কালাম। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হওয়া এসআই পরিমল চন্দ্র শীলের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
গোলাগুলিকালে অন্য ডাকাতরা পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় আকুল মিয়া নামের এক ডাকাতকে (২৮) গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নওধার গ্রামের ইদ্রিছ আলীর ছেলে। এসময় তার নিকট থেকে ১টি দেশীয় পাইপগান, ২টি কার্তুজ, ৪টি শাবল, দুটি ব্যাগ ও ১টি কোমরের ব্যাগবেল্ট উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম জানতে পারেন লামাকাজির দিঘলী গ্রামের একটি হিন্দু বাড়িসহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের ৩/৪টি প্রবাসী বাড়িতে টার্গেট করে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে ১৫/১৬ জনের ডাকাতদল। খবর পেয়েই তারা বিশ্বনাথের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাদা পোশাকে পুলিশ পাঠান।
অবশেষে নিশ্চিত হওয়ার পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডাকাতদের মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ওসি শামসুদ্দোহা, ওসি তদন্ত দুলাল আকন্দসহ আরও একদল পুলিশ নিয়ে লামাকাজি পয়েন্টের দিকে রওয়ানা হন। ডাকাতরা টের পেয়ে লামাকাজির দিঘলীর হিন্দু বাড়িতে হানা না দিয়ে খাজাঞ্চীর দিকে যাওয়া শুরু করে। এ সময় পুলিশও ডাকাতদের পিছু নেয়। এক পর্যায়ে খাজাঞ্চীর কুড়িখলা ব্রিজে গেলে ডাকাতরা গুলি ছোঁড়া শুরু করে। প্রায় ১৫ মিনিটে উভয় পক্ষে ২৪ রাউন্ড গোগুলাগুলির পর এক ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় ডাকতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম এ প্রতিবেদককে বলেন, মঙ্গলবার রাতে দিঘলী গ্রামের একটি হিন্দু বাড়িসহ কমপক্ষে ৩/৪টি প্রবাসী বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি ছিল সঙ্গবদ্ধ অস্ত্রধারী ওই ডাকাত দলের।
ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এপ্রতিবেদককে বলেন, গোয়েন্তা তথ্যের ভিত্তিতে খবর পাওয়ার সাথে সাথে তারা ডাকাতদের মোকাবেলা করে এক ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। ডাকাতির প্রস্তুতি ও বন্দুকযুদ্ধে অংশ নেওয়া অস্ত্রধারী বাকি ডাকাতদেরও গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।