শ্রীমঙ্গলে লোকালয়ে বিদ্যুতের তারে ঝলসে যাওয়া বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতি বানর উদ্ধার

34

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বন উজাড় ও বনের ভেতরে মানুষের অবাধ বিচরণ এবং বন্যপ্রাণীর খাদ্য সঙ্কট থাকায় লোকালয়ে আসছে খাবারের সন্ধানে প্রাণীকূল। এতে মানুষের হাতে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী। এছাড়াও গাড়ীর চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত মারা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী।
রবিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের ভানুগাছ রোডস্থ একটি বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানর বিদ্যুতের তারে ঝলছে গুরুতর আহতবস্থায় উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। লজ্জাবতী বানরটির বাম হাতের একটি অংশ ঝলসে গেছে।
লজ্জাবতী বানর ছাড়াও সম্প্রতিক সময়গুলোতে তিনি বেশ কয়েকটি অজগর এবং শঙ্খিনী সাপসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছেন বলেও জানিয়েছেন ব্যক্তি উদ্যোগে গড়া বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করে সেবা ফাউন্ডেশনে সুচিকিৎসা চলছে। বৈদ্যুতিক তারে লজ্জাবতী বানরটির বাম হাতের একটি অংশ ঝলসে গেছে। বানরটি ঠিকমতো হাঁটতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, লজ্জাবতী বানর বিশ্বব্যাপী বিপন্ন প্রজাতির একটি প্রাণী। মূলত খাদ্যসংকটের কারণে লজ্জাবতী বানরসহ নানা বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসছে। মানুষ এসব বন্যপ্রাণীদের হঠাৎ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বা আমাদের ফোন করেন। আমরা গিয়ে এসব প্রাণী উদ্ধার করে আমাদের সেবা ফাউন্ডেশনে প্রয়োজনীয় সেবা-শুশ্র“ষা করে পুনরায় বনে অবমুক্ত করি।
জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. কামরুল হাসান বলেন, লজ্জাবতী বানরের প্রধান খাবার হচ্ছে পোকামাকড় এবং দ্বিতীয়ত ওরা খায় বিভিন্ন গাছের আঠা বা গাম। ওরা নিশাচর প্রাণী তাই দিনের বেলা বড় গাছপালা না থাকার কারণে ওদের লুকানোর জায়গা মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। যখনি সে ছোট গাছে লুকোতে যায় তখনি লোকজনের নজরে পড়বে। লোকজনের নজরে পড়লেই তারা লজ্জাবতী বানরকে ধরে ফেলে। লাউয়াছড়া বনে বড় গাছপালা কমে যাওয়ার কারণে লজ্জাবতী বানরদের লুকানোর জায়গা একবারে কমে যাচ্ছে। ফলে তারা মানুষের হাতে ধরা পড়ছে।’