সুনামগঞ্জ থেকে বিআরটিসি বাস প্রত্যাহার করা না হলে ২৪ জুন থেকে ৭২ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট

36

সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থ পরিপন্থী সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে চালু হওয়া বিআরটিসির বাস প্রত্যাহার দাবিতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছেন সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে তারা এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে সুনামগঞ্জ থেকে বিআরটিসি বাস প্রত্যাহার না করা হলে ২৪ জুন ৭২ ঘন্টার ধর্মঘট কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। তাদের দাবি প্রায় ১০ হাজার পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের পরিবারকে পথে বসিয়ে এবং তাদের পেটে লাথি দিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে বিআরটিসি সার্ভিস কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যাবে না। এই অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরিবহন মালিক শ্রমিক আজ ঐক্যবদ্ধ। তারা শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও রাজপথে থেকে তাদের দাবি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, যখন বিএনপি-জামাত জোট আন্দোলনের নামে ৯২ দিন হরতাল অবরোধ দিয়েছিল, সে সময় সাধারণ যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে যাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো সড়ক পরিবহন শ্রমিক মালিকরা। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় তাদের গাড়ি নামিয়ে যাত্রী পরিবহণ করেছেন। নেতাকর্মীদের প্রশ্ন সে সময় বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ কোথায় ছিলেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতে সিলেট-তামাবিল সড়কে বিআরটিসির দোতলা বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছিলো। যা পরবর্র্তীতে সিলেটের সড়ক পরিবহণ মালিক শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০৩ সালে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নজমুল হুদার সভাপতিত্বে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৮ দফা দাবির প্রেক্ষিতে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় সে সময় থেকে আন্তঃজেলা রুট সমূহে চলাচলরত দোতলা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। চুক্তি অনুযায়ী যে কোন জেলায় বিআরটিসি বাস চলাচল করতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলার পরিবহণ সংগঠনের অধীনে চলাচল করতে হবে। পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী বিআরসিটি বাসের লীজ প্রথা বাতিল করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিআরসিটি বাস নির্দিষ্ট ডিপো থেকে ডিপো পর্যন্ত চলাচলের বিধান থাকলেও সুনামগঞ্জে ডিপো না থাকলেও সেখানে বিআরটিসি বাস চলাচল করছে। এমতাবস্থায় একই সড়কে প্রাইভেট সেক্টর ও বিআরটিসি’র গাড়ী চলাচল করলে প্রাইভেট সেক্টর টিকে থাকতে পারবে না। এমনিতে বর্তমানে প্রাইভেট সেক্টরে পরিবহণের ব্যবস্থা লাঠে উঠার উপক্রম হয়েছে। তার উপর যদি আবার বিআরটিসি’র বাস সার্ভিস চালু হয় তাহলে প্রাইভেট সেক্টরের পরিবহণ ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
এসব দাবি বাস্তবায়নের জন্য ২৩ জুন পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া হলো। অন্যথায় ২৪ জুন সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৭২ ঘন্টার পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হবে। বিজ্ঞপ্তি